আব্দুল গাফফার
শেরপুর বগুড়া প্রতিনিধি
বগুড়ার শেরপুরে ছোনকা দ্বি-মুখি উচ্চ বিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থীকে উপর্যুপরি বেত্রাঘাত করার অভিযোগ উঠেছে শ্রেণী শিক্ষক ফাতেমা খাতুনের বিরুদ্ধে। পরে এই ঘটনার প্রতিবাদে বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন কর্মসূচি পালন করেন। মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এই ঘটনাটি ঘটে। বেত্রাঘাতে আহতরা হলেন- বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর কাউছার আহমেদ, সোহাগ হোসেন, রিমন আহম্মদ, নুরাইয়া আক্তার ও উম্মে সালমা মীম। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বেশকিছুদিন ধরেই উপজেলার ছোনকা দ্বি-মুখি উচ্চ বিদ্যালয়ের কৃষি শিক্ষক ফাতেমা খাতুন অশালিন পোশাক পড়ে ক্লাসে আসেন। এনিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। একপর্যায়ে বিষয়টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দৃষ্টি আর্কষণ করেন শিক্ষার্থীরা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষক ফাতেমা খাতুন ওইসব শিক্ষার্থীদের বেধড়ক বেত্রাঘাত করেন। ফলে গুরুতর আহত হন তারা। পরে আহত শিক্ষার্থীরা স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে গিয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করেন বলে সূত্রটি জানান। এদিকে ওই ঘটনার পরপরই বেলা সাড়ে বারোটার দিকে ক্লাস থেকে বেরিয়ে আসেন নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা। তারা ঘটনার প্রতিবাদ ও অভিযুক্ত শিক্ষিকার বিচারের দাবি জানান। অন্যথায় লাগাতার ক্লাস বর্জন কর্মসূচি দেওয়ার ঘোষণা দেন তারা।বেত্রাঘাতে আহত শিক্ষার্থী কাউছার আহমেদ জানান, ফাতেমা ম্যাডামের ক্লাস ছিল না। তারপরও বেত নিয়ে এসে কোন কিছু না বলেই আমাদেরকে মারধর করেন। সেইসঙ্গে আমাদেরকে দুশ্চরিত্রসহ বিভিন্ন গালিগালাজ করেন। অভিভাবক শরিফুল ইসলাম জানান, অন্যায় ভাবে আমার মেয়ে মিম আক্তারকে বেত্রাঘাত করা হয়েছে। এভাবে মারধর করা তার উচিৎ হয়নি। ঘটনার উপযুক্ত বিচার না পেলে আইনের আশ্রয় নেবেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জীম আক্তার, হাবিবা খাতুন জানান, ফাতেমা ম্যাডাম অশালিন পোশাক পড়ে প্রতিনিয়ত ক্লাসে আসেন। এনিয়ে প্রতিটি ক্লাসে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আলোচনা-সমালোচনা হয়। কিন্তু ম্যাডাম যেন ছোট না হন, সেজন্যই প্রধান শিক্ষকের মাধ্যমে আমরা তাকে জানাই। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের ক্লাসের শিক্ষার্থীদের বেধড়ক বেত্রাঘাত করেছেন। জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিক খুরশিদি খুদা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, শিক্ষার্থীদের মারধরের অভিযোগ পাওয়ার পরপরই ঘটনাটি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। এছাড়া ক্লাস বর্জন কর্মসূচি পালন শুরু করলে উপযুক্ত বিচার দেওয়ার আশ্বস্ত করে শিক্ষার্থীদের শান্ত করেছেন করে দাবি করেন তিনি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে বলেন, বিষয়টি শুনেছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও অত্র বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সানজিদা সুলতানা জানান, বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এদিকে বক্তব্য জানতে চাইলে অভিযুক্ত শিক্ষিক ফাতেমা খাতুন বলেন, বিষয়টি শোনার পর আমি রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি। তাই কয়েকজনকে বেত্রাঘাত করে শাসন করেছেন বলে দাবি করেন।