মোঃ মাহবুব আলম শাওন বদরগাছি উপজেলা প্রতিনিধি
নওগাঁর বদলগাছীতে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) আওতায় গভীর নলকূপের পানি সরবরাহে কৃষকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিঘাপ্রতি অফিস নির্ধারিত ফি এর চেয়ে ৬০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত বেশি নেওয়া হচ্ছে এমন অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী কৃষকরা।
বদলগাছী বিএমডিএ অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বোরো মওসুমে উপজেলার আটটি ইউনিয়নের মধ্যে সদর ইউপিতে ৯৯০ টাকা, মথুরাপুরে ১০০০ টাকা, পাহাড়পুরে ১০৬০ টাকা, মিঠাপুরে ১০৫০ টাকা, কোলাতে ১০৪০ টাকা, বিলাশবাড়ীতে ১০২০ টাকা, আধাইপুরে ১০৩০ টাকা, বালুভরাতে ১০৮০ টাকা বিঘাপ্রতি পানি সেচের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। পানি সেচের জন্য প্রি-পেইড মিটারে বিদ্যুৎ বিল দিতে হয় প্রতি ঘন্টায় ১৪৫ টাকা।
সরকারিভাবে ফি নির্ধারণ করে দেওয়া হলেও কোথাও নেওয়া হচ্ছে না নির্ধারিত ফি। আধাইপুর ইউপিতে ১০৩০ টাকা নির্ধারিত ফি হলেও ওকরবাড়ী ও বিষ্ণুপুরে নেওয়া হচ্ছে ১৮০০ টাকা করে।
বিষ্ণুপুর সরদারপাড়া গ্রামের হাসিবুল হোসেন বলেন, আমি পাঁচ বিঘা জমি চাষাবাদ করি। আমার কাছ থেকে বিঘা প্রতি সেচের জন্য ১৮০০ টাকা চেয়েছে। যেখানে উপজেলা থেকে ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১০৩০ টাকা। প্রায় ৮০০ টাকা বিঘাপ্রতি বেশি নেওয়া হচ্ছে। বরেন্দ্র অফিস বা উপজেলা প্রশাসন থেকে কোন ধরণের তদারকি নেই। এই সুযোগে ইচ্ছে মতো পানির দাম নিচ্ছে।
বিষ্ণুপুর উত্তর পাড়া গ্রামের নুর ইসলাম বলেন, আমি দুই বিঘা জমি চাষাবাদ করি। গত বছর নিয়েছিল ১৬০০ টাকা। এবার আমার কাছ থেকে ২০০০ টাকা চেয়েছে।
গত রোববার (২০ এপ্রিল) সরেজমিনে ওকরবাড়ী ডিপটিউবয়েল এলাকার কৃষকদের সাথে কথা বললে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। তারা আরও জানায়, সপ্তাহে রোববার এবং বৃহস্পতিবার ডিপ বন্ধ থাকে। মাঠে কাজ করতে আসা সকল কৃষকই অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ করেন।
ওকরবাড়ী ডিপটিউবয়েলের পরিচালক রুবেল হোসেন বলেন, আশেপাশের ডিপগুলো যে পরিমাণ টাকা নেবে আমিও সে পরিমাণ টাকা নিবো। যারা অভিযোগ করেছে তারা ফ্রি পানি নিতে চেয়েছিল। আমি দিতে রাজি হইনি। তাই তারা অভিযোগ করেছে। তবে বিঘা প্রতি কত টাকা করে নিচ্ছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।
এ বিষয়ে বদলগাছী বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সহকারী প্রকৌশলী মো. ইন্তেখাফ আলম বলেন, পানি সেচের বেশি টাকা নেওয়ার কোন অভিযোগ পাইনি। টাকা বেশি নিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত জাহান ছনি বলেন, বেশি টাকা নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। যদি টাকা বেশি নেয় তবে তার আপারেটরশীপ বাতিল করা হবে।