মো আমিরুল ইসলাম পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি।
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার চন্দনবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদে ভিডাব্লিউবি (VWB) কার্ড বিতরণে অনিয়ম ও অর্থ লেনদেনের প্রতিবাদ করায় সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য মোছা. লাভলী আক্তারকে প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা—এমন অভিযোগ উঠেছে জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ও বোদা উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একেএম ওয়াহিদুজ্জামান সম্রাটের বিরুদ্ধে।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে বোদা উপজেলা রিপোর্টার্স ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লাভলী আক্তার এসব অভিযোগ তুলে ধরেন। তিনি জানান, ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য হিসেবে তিনি ভিডাব্লিউবি কার্ড বিতরণে চরম অনিয়ম ও ঘুষ লেনদেনের প্রতিবাদ করেছিলেন।
তিনি বলেন, “চন্দনবাড়ি ইউনিয়নে মোট ২৭৫টি ভিডাব্লিউবি কার্ড বরাদ্দ দেওয়া হয়। সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে প্রকৃত সুবিধাভোগীদের তালিকা তৈরির নির্দেশনা থাকলেও তা উপেক্ষা করে ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান তৌইবুর রহমান ও ইউপি সদস্য মামুনুর রশিদ জুয়েল স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে তাদের নিজস্ব লোকদের তালিকাভুক্ত করেন। এমনকি দরিদ্র নারীদের কাছ থেকে কার্ড দেওয়ার বিনিময়ে ১০ হাজার টাকা ঘুষও নেওয়া হয়েছে।”
লাভলী আক্তার আরও জানান, বিষয়টি নিয়ে তিনি লিখিতভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন। ইউএনও তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করেন এবং তদন্তের দায়িত্ব দেন একেএম ওয়াহিদুজ্জামান সম্রাটকে।
পরে ২৩ জুলাই অভিযুক্ত ও অভিযোগকারীসহ সংশ্লিষ্টদের ৩০ জুলাই সকাল ১০টায় ইউনিয়ন পরিষদে উপস্থিত থাকতে চিঠি ইস্যু করা হয়। নির্ধারিত সময়ে উপস্থিত হয়ে লাভলী আক্তার দেখতে পান, অভিযুক্ত প্যানেল চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য সাজানো কিছু লোকজন নিয়ে এসে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দিচ্ছেন।
তিনি বলেন, “তদন্ত কর্মকর্তা একেএম ওয়াহিদুজ্জামান সম্রাট আমাকে ধমক দিয়ে জোর করে কাগজে স্বাক্ষর নিতে বাধ্য করেন। তিনি বলেন—‘সাংবাদিকদের সামনে গিয়ে কাঁদলেন, তাতে লাভ কী হলো? পুরো ইউনিয়নের মানুষকে আপনি হেয় করলেন।’ এরপর তিনি আরও বলেন—‘আজকে আপনাকে সাক্ষী আনতে বলা হয়েছিল, আপনি আনেননি কেন?’ অথচ আমাকে এমন কোনো নির্দেশনাই দেওয়া হয়নি।”
এসময় লাভলী আক্তার দাবি করেন, তদন্ত কর্মকর্তা তাকে প্রকাশ্যেই হুমকি দিয়ে বলেন—“আপনার খবর করবো আমরা। এই মহিলার ভিডিও রেখে দিন।”
তিনি জানান, একজন জনপ্রতিনিধি হয়ে তিনি এ ধরনের অপমান, হুমকি ও হয়রানির শিকার হওয়ায় চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তিনি সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেন।
এ বিষয়ে একেএম ওয়াহিদুজ্জামান সম্রাটের বক্তব্য নিতে তার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।