মোঃ আতিকুর রহমান আজাদ
মাদারীপুর প্রতিনিধিঃ
মাদারীপুরের কালকিনিতে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতেই লাঞ্ছিত হলো জেলা আওয়ামী লীগ নেতা। ধাক্কা দিয়ে কেড়ে নেয়া হয় বক্তৃতা দেয়ার মাইক্রোফোন। এমন একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এতে পুরো জেলাজুড়ে বইছে সমলোচনার ঝড়। সোমবার দুপুরে মাদারীপুরের কালকিনি পৌরসভা মাঠে ঘটে এ ঘটনা। লাঞ্ছিত সিরাজ ফরাজী মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। তিনি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য শাহাবুদ্দিন ফরাজীর ভাই। ঘটনার সময় তার ভাই শাহাবুদ্দিন ফরাজী উপস্থিত ছিলেন।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, আগামী ৩০ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাদারীপুরের কালকিনি সৈয়দ আবুল হোসেন বিশ^বিদ্যালয় মাঠে নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দিবেন। এই সভাকে সফল করতে সোমবার দুপুরে বর্ধিত সভার আয়োজন করা হয়। এই সভায় বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সিরাজ ফরাজী।
বক্তব্যের একপর্যায়ে সিরাজ ফরাজী বলেন, এবারের নির্বাচনটা সেই পরিস্থিতি বা পরিবেশের মধ্যে নেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা, তার উপরে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের একটা লোলুভপদৃষ্টি পড়েছে,সমস্ত পরাশক্তি এই নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে। আমাদের দেশের প্রধান বড়দল নির্বাচনে আসবে না। বিএনপি নির্বাচনে না আসার কারনে ভোটার উপস্থিতি কম হবে। ভোটার উপস্থিতি যাতে না হয়, তাহলে এই নির্বাচনটা হবে হাস্যকর। সেই নির্বাচনকে প্রতিযোগিতামূলক করার জন্য, অনেকেই অংশ নিচ্ছেন। এই নির্বাচনটি গতানুগতিক নির্বাচন হিসেবে দেখলে হবে না। এই নির্বাচনকে প্রতিযোগিতামূলক করার জন্য, মাদারীপুর-০৩ আসনে নির্বাচন করতেছে দুইজন। এই দুই ব্যক্তি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুইনয়ন। আপনারা ভুল করবেন না। এরপর আর কথা বলার সুযোগ পায়নি সিরাজ ফরাজী।
জানা যায়, সিরাজ ফরাজী যখন বলেন ড. আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপ ও তাহমিনা বেগম প্রধানমন্ত্রীর দুইনয়ন, তখনই সিরাজী ফরাজীর বক্তব্য থামিয়ে দেয়া হয়। এরপরই নেতারা বলে উঠেন এটা সঠিক কথা নয়। আপনি দালালি করতে এখানে এসেছেন। তখন, সামনে ও পেছেনের কর্মীদের মধ্যে শুরু হয় হট্টগোল। এ সময় সিরাজ ফরাজীকে বেশ কয়েকজন ধাক্কা দেন এবং এ্যাডভোকেট কালু খান সিরাজ ফরাজীকে হাত ধরে টানতেও দেখা যায়,পিছন থেকে ধাক্কাতে দেখা যায়। শুরু হয় মাদারীপুর-০৩ আসনের নৌকার প্রার্থী ড. আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপের নেতাকর্মীদের চরম উত্তেজনা। একপর্যায়ে তাকে বক্তৃতা না দিয়ে নিজ আসনে বসানো হয়। এ সময় বর্ধিতসভার সামনে ড. আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপকে রেগে যেতে দেখা যায়। এর কিছু সময় পর পরিস্থিতি শান্ত হয়।
বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপ, সদস্য আনোয়ার হোসেন, সদস্য শাহাবুদ্দিন ফরাজী, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাহাবুদ্দিন আহম্মেদ মোল্লা, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুনীর চৌধুরীসহ কালকিনি,ডাসার উপজেলা ও কালকিনি পৌরসভা আ.লীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।