মুন্না ইসলাম আগুন স্টাফ রিপোর্টার রাজশাহী:
রাজশাহীর দূর্গাপুরের প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত লাইসেন্স বিহীন ভূয়া আল-আকশা ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টার গড়ে উঠেছে। দূর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্যাথলজিক্যাল বিভাগে কর্মরত আঃ জলিল দীর্ঘদিন যাবৎ ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টারের অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। সে দীর্ঘদিন দূর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্যাথলজিক্যাল বিভাগে চাকুরী করার সুবাদে উক্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেের টিএইচ ও ফ্যামিলি প্ল্যানিং অফিসারকে ম্যানেজ করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে ।
সরেজমিনে দেখা যায়, দূর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্যাথলজিক্যাল বিভাগে বিভিন্ন রকম টেষ্ট দিলে উক্ত প্যাথলজিতে কর্মরত আঃ জলিল কাউন্টারে টাকা জমা না দিয়ে তিনি নিজে তার প্যাথলজী বিভাগে তার নিজের নিয়োগকৃত দালালের কাছে টাকা জমা নেন এবং রুগীর কাছ থেকে রক্ত নিয়ে মহিলা দালালের মাধ্যমে বোরখার ভিতর করে তার আল- আকশা নামের লাইসেন্স বিহীন ভুয়া ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টারে নিয়ে যান।
সেখানে টেষ্ট করার পরে আবার চুপ করে একই ভাবে নিয়ে এসে রুগীর হাতে একটি রিপোর্ট ধরিয়ে দেন। রিপোর্টের নিচে স্বাক্ষর থাকে প্যাথলজিক্যাল মোঃ আজিজুল হক কিন্তু আজিজুল হক তিনি দূর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্যাথলজীক্যাল বিভাগে চাকুরী করলেও তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ ডিউটি করেন রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ডেপুটিসনের প্যাথলজীক্যাল বিভাগে। তার ভূয়া স্বাক্ষর ও সীল ব্যবহার করে দিনের পর দিন আঃ জলিল তার আল- আকশা ডায়াগনষ্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টারে অর্থাৎ প্যাথলজীক্যালের রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
অপর দিকে তার আল-আকশা নামের লাইসেন্স বিহীন ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টারের প্যাডে আল্ট্রাসনোগ্রামের রিপোর্ট দিলেও আছে ফেমেলিপ্যালিন এর প্রধান ডাঃ আঈশা নুসরাত জাহান নামের স্বাক্ষর ও সীলমোহর।
এদিকে,দূর্গাপুর উপজেলা ফ্যামিলিপ্যানিংয়ের প্রধান ডাঃ আঈশা নুসরাত জাহান কর্মরতঅফিসিয়াল ডিউটি চলাকালে সময় আল-আকশা নামের লাইসেন্স বিহীন ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টারে বসে দেদারছে রুগী দেখছেন ও নিজে স্বাক্ষ করে রিপোর্ট দিচ্ছেন। নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক ভূক্তভোগী বলেন, দূর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান ডাঃ রুহুল আমিন (টিএইচও) ছত্র-ছায়ায় ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টারের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
জানতে চাইলে দূর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এর প্যাথলজীক্যাল বিভাগের আঃ জলিল সাংবাদিকদের বলেন, আমি এলাকার ছেলে,দূরের লোকজন এসে ব্যবসা করে খাচ্ছে, আমি করলে দোষ কি। প্যাথলজীক্যাল আজিজুল হক ও ফ্যামিলি প্ল্যানিং ডাঃ আঈশা নিসরাত জাহানের স্বাক্ষর জাল করে অফিস আওয়ারে তার প্রতিষ্ঠানের প্যাডে রিপোর্ট দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, টিএইচও ডাঃ রুহুল আমিন স্যার বিষয়গুলো সব জানেন এবং অবগত আছেন। ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লাইসেন্স না থাকলেও তিনি আবেদন করেছেন বলে জানান।
এব্যাপারে দূর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের টিএইচও ডাঃ রুহুল আমিন বলেন, প্যাথলজিক্যাল আজিজুল হক রাজশাহীতে ডেপুটিসনে আছে। তার স্বাক্ষরে কোন রিপোর্ট হতে পারে না। এব্যাপারে আজিজকে ফোন দিলে তিনি বলেন আমি রাজশাহীতে ডিউটিতে আছি। ফ্যামিলিপ্ল্যানিং প্রধান ডিউটি চলা কালীন সময় আল-আকশা ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টারে বসে আল্ট্রাসনোগ্রাম করে তার নিজ স্বাক্ষরে রিপোর্ট দেওয়ার বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন এটা আমার শাখার বিষয় নয়। তবে আপনি ডিডি স্যারের সাথে কথা বলতে পারেন। তবে আমি তাকে শতর্ক করবো। তিনি বলেন, মেডিক্যালে ডিউটি চলা অবস্থায় অফিসিয়াল সময় কোন ডাক্তার বা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বাইরে কোন ক্লিনিকে বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রুগী দেখতে বা কোনরুপ রিপোর্ট দিতে পারবে না। তিনি আরো বলেন, আমি আল-আকশা ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টার বন্ধের জন্য মৌখিক ভাবে বলেছি আজকে চিঠি প্রেরন করবো।
জানতে চেয়ে রাজশাহী ডেপুটি সিভিল সার্জেন্ট ডাঃ মাহাবুবা খাতুন এর সাথে মুঠোফোনে কথা বলা হলে তিনি বলেন, আমার জানা মতে আল-আকশা ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টারের লাইসেন্স নাই। তবে দূর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্যাথলজীক্যাল বিভাগ বা অন্য কোন বিভাগের কোন কর্মকর্তা কর্মচারীরা অফিসিয়াল টাইমে বাহিরে কোন ক্লিনিকে বা ডায়াগনস্টিকে রুগী দেখতে বা কোন রিপোর্ট তৈরি করে দিতে পারবে না। যদি এই ধরনের রিপোর্ট পাওয়া যায় তাহনে তাহার বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।