যোগেশ ত্রিপুরা রামগড় প্রতিনিধি
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা রামগড় উপজেলায় মাষ্টার পাড়া অদ্বৈতধাম আশ্রম প্রাঙ্গণে রাস উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ধর্মীয় নিয়ম অনুযায়ী রাস উৎসব গত কাল একাদশী কীর্তন দিয়ে শুরু হয়। কিন্তু আজ আনুষ্ঠানিক ভাবে ভোর বেলা থেকে হয়ে পুরো নাগ মন্দির প্রাঙ্গণ বাঁশির সুরে মাতহারা করে তুলছ উৎসবটি। এই উৎসব আজ সারারাত কৃষ্ণ গৌড় নামে লীলা কীর্তন দিয়ে চলবে এবং কাল ভোর বেলা লীলা কীর্তন দিয়ে শেষ হবে। এই উৎসবে বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার সনাতনীয় বক্তগন রাস মেলা অনুষ্ঠানে লীলা কীর্তন দেখা ও শুনার জন্য সমাগম হন ।রাসলীলা বা রাস যাত্রা সনাতন ধর্মালম্বীদের একটি বাৎসরিক উৎসব। রাস মূলতঃ শ্রীকৃষ্ণের ব্রজলীলার অনুকরণে বৈষ্ণবীয় ভাবধারায় অনুষ্ঠিত ধর্মীয় উৎসব। ভগবান কৃষ্ণের রসপূর্ণ অর্থাৎ তাত্ত্বিক রসের সমৃদ্ধ কথা বস্তুকে রাস যাত্রার মাধ্যমে জীবাত্মার থেকে পরমাত্মায়, দৈনন্দিন জীবনের সুখানুভূতিকে আধ্যাত্মিকতায় এবং কামপ্রবৃত্তি সমূহকে প্রেমাত্মক প্রকৃতিতে রূপ প্রদান করে অঙ্কন করা হয়েছে এই উৎসবের মাধ্যমে। রাস হলো এক ধরনের বৃত্তাকার নাচ যা আট, ষোলো বা বত্রিশ জনে সম্মিলিতভাবে উপস্থাপনা করা যায়।ভারতের মথুরা ও বৃন্দাবনে, পশ্চিমবঙ্গ ও নবদ্বীপ সহ অন্যান্য জায়গায়, এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য শান্তিপুরের মূল উৎসব হলো রাস উৎসব বলে পরিচিত। এই উৎসবের অংশ হিসেবে গোপিনীবৃন্দ সহযোগে রাধা-কৃষ্ণের আরাধনা এবং অঞ্চলভেদে প্রভৃতি শাস্ত্রীয় ও বিভিন্ন লোকায়ত নৃত্যসুষমায় রাসনৃত্য বিশেষ মর্যাদার অধিকারী।
আজ রাসযাত্রা বা রাস পূর্ণিমা, ভগবান শ্রীকৃষ্ণের প্রেমের উৎসব। হিন্দু ধর্মে এই পূর্ণিমা তিথির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। রাস মূলত বৈষ্ণব ধর্মের উৎসব। বৈষ্ণবীয় ভাবধারায় শ্রীকৃষ্ণের প্রেম প্রকৃতির উৎসব। এই দিন গোপিনীদের সহযোগে রাধা-কৃষ্ণের পুজো করা হয়।
বাংলায় রাস উৎসব আরও জনপ্রিয় হয়। তবে কেবল পশ্চিমবঙ্গেই যে ধূমধাম করে রাসযাত্রা উদযাপিত হয় পাশাপাশি বৃন্দাবন,মথুরা ওড়িশা, আসাম, মণিপুরেও আড়ম্বরের সঙ্গে রাস উৎসব পালন করা হয়। এই উৎসবের মূল বিষয় রাধা-কৃষ্ণের আরাধনা হলেও, অঞ্চল ভেদে ভিন্ন ভিন্ন রীতিতে রাস পূর্ণিমা পালিত হয়।