জেলা প্রতিনিধি নড়াইল
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার লক্ষীপাশা আদর্শ বিদ্যালয় এলাকার একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মুরাদুজ্জামান সরকারি নিয়ম নীতি উপেক্ষা করে নিজ ইচ্ছা মত চালাচ্ছে শতবর্ষ পূর্বে নির্মীত এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
৩১ ডিসেম্বর মংগলবার সরোজমিন ঘুরে জানাগেছে ওই প্রধান শিক্ষক ২০২৫ সালে ছাত্র ভর্তির ক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের আদেশ উপেক্ষা করে নিজ ইচ্ছা মত ভর্তি করছে ছাত্র-ছাত্রী। তাছাড়া কারিগরি শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা কর্তৃক ভকেশনাল নবম ও দশম শ্রেনীর বোর্ড পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় লক্ষীপাশা আদর্শ বিদ্যালয়ে একটি পরীক্ষা কেন্দ্র আছে। কেন্দ্র সচিব হলেন ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মুরাদুজ্জামান। সরকারি বিধি মোতাবেক কেন্দ্রে একজন সরকারি কর্মকর্তা হাজির থাকবেন কিন্তু এই পরীক্ষায় কেন্দ্র সচিব মোঃ মুরাদুজ্জামান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করেন নাই এমনকি সহকারী কেন্দ্র সচিব বিষয়টি জানেন না। তাছাড়া ওই কেন্দ্রে একজন পরীক্ষার্থীর ডান হাত ভেংগে যাওয়ার কারনে একজন শ্রুতি লেখক নিয়োগের নিয়ম থাকলেও কেন্দ্র সচিব তার ইচ্ছা মত অন্য একজন ছাত্রকে দিয়ে পরীক্ষা নেন যা সম্পূর্ণ আইনের পরিপন্থী। তাহলে এই কেন্দ্র সচিবের / ওই প্রধান শিক্ষকের খুটির জোর কোথায়। ডান হাত ভাংগার অযুহাতে এবং হাতে ব্যান্ডেজ পরিয়ে অবৈধ শ্রুতি লেখক এর দ্বারা পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন কেন্দ্র সচিব মোঃ মুরাদুজ্জামান। এ ব্যাপারে তিনি মোটা অঙ্কের অনৈতিক সুবিধা নিয়েছেন বলে ধারনা করা হচ্ছে। তদন্ত করলে সব বের হয়ে আসবে।
এ অবৈধ শ্রুতি লেখকের বিষয়টি পরীক্ষা কেন্দ্রের অন্য কোনো কর্মকর্তা যেমন উপজেলা নির্বাহী অফিসার, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এমনকি সহকারী কেন্দ্রসচিব/ হল সুপার কিংবা সমন্বয়কারী কর্মকর্তাদের কেউ ই অবগত নন। কারিগরি শিক্ষাবোর্ড হতে শ্রুতি লেখকের কোনো অনুমতি গ্রহণ করা হয় নাই।
অনুসন্ধানে আরো জানাগেছে ২০০৯ সালে এস এস সি পরীক্ষা চলাকালীন নিজ বিদ্যালয়ের ছাত্রীকে নকল সরবরাহ করা কালে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রেজাউল করিম (বর্তমানে অতিরিক্ত সচিব পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়) নিকট হাতেনাতে ধরা পড়ে জেল হাজতে যান। এঘটনায় পাবলিক এক্সজামিনেশন এ্যাক্ট অনুযায়ী নিয়মিত মামলা হয়েছিল। লোহাগড়া লক্ষীপাশা পাইলট বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক থাকাকালীন কোন এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির করার দায়ে তিনি চাকুরী থেকে বরখাস্ত হয়েছিলেন।
এঘটনায় ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব মোঃ মুরাদুজ্জামানের কাছে সাংবাদিকরা নতুন বছরে শ্রেনি শাখায় অতিরিক্ত ছাত্র ভর্তির আদেশ দেখতে চাইলে তিনি ছাত্র ভর্তির শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমতির আদেশ দেখাতে পারেন নাই এবং ভোকেশনাল পরীক্ষার শ্রুতি লেখকের নিয়োগের আদেশ দেখতে চাইলে তিনি সেই আদেশটি ও দেখাতে পারেন নাই। কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষায় কেন্দ্রে একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা নিয়োগের নিয়ম থাকলে তিনি বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি কোন সদউত্তর দিতে পারেন নাই।
তাহলে কি ওই প্রধান শিক্ষক মোঃ মুরাদুজ্জামান প্রশাসন কে বৃদ্ধ আংগুল দেখিয়ে এহেন কর্ম করেছেন তা এলাকাবাসী জানতে চায় বা উনি কোন ছাতার নীচে দাড়িয়ে এমন কাজ করছেন।
এঘটনায় লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মিঠুন মৈত্রের সাথে কথা হলে তিনি বলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাথে কথা বলে বিধি মোতাবেক ব্যাবস্থা নিবেন।
ঘটনাটি নড়াইল জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গীর আলমকে জানানো হলে তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে ফোন কেটে দেন।
এবিষয়ে নড়াইল জেলার এডিসি (শিক্ষা ও আইসিটি) মোঃ আহসান মাহমুদ রাসেলকে অবহিত করলে তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট জানাতে বলেন।