লাখাই উপজেলা প্রতিনিধি
দীর্ঘ আট মাস বিবাহিত জীবন কাটানোর পর স্বামী কর্তৃক প্রতারিত হয়ে এখন স্ত্রী স্বীকৃতির দাবিতে অনশনে বসেছেন এক গৃহবধূ।বানিয়াচং উপজেলার বুড়ুজ পাড়া গ্রামের রানু হালদারের মেয়ে সীমা রানি হালদার (২২)।
২৫ সেপ্টেম্বর সারাদিন-রাত লাখাই উপজেলার গোপালপুর গ্রামের শ্বশুর আরাধন সরকারের বাড়িতে অনশনে ছিলেন। তবে, সারাদিন অনশনের পরও পলাতক স্বামী বা তার পরিবারের কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি, তাদের ঘর তালাবদ্ধ।
জানা যায়, সীমা রানি হালদার ভালবেসে গোপালপুর গ্রামের শ্রাবণ সরকারকে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে হবিগঞ্জের শ্রী শ্রী কালীবাড়ি কার্যকরী পরিষদে বিয়ে করেন। তারা নোটারি পাবলিক হবিগঞ্জে এফিডেভিটও সম্পন্ন করেন। বিয়ের পর তারা নরসিংদীর পাঁচদোনাতে একটি ভাড়া বাসায় সংসার শুরু করেন।
সীমারানির অভিযোগ, সংসার চলাকালীন সময়ে তিনি তার বাবার বাড়ি থেকে বিভিন্নভাবে টাকা এনে স্বামীর হাতে দিয়েছেন। শ্রাবণ সরকার তাকে অত্যাচার করে বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে তার বাবা আরাধন সরকারের কাছেও পাঠিয়েছেন।সীমারানি হালদার আরও বলেন,তার স্বামী তার দুই মাসের গর্ভ নষ্ট করেছে।
সীমা রানি আরও জানান, ২৪ সেপ্টেম্বর তার স্বামী শ্রাবণ সরকার তাকে মিথ্যে প্রলোভন দেখিয়ে শ্বশুর বাড়িতে নিয়ে আসার কথা বলে হবিগঞ্জ শহরে নিয়ে আসেন। সেখানে একটি চায়ের দোকানে বসিয়ে শ্রাবণ তার সোনার গয়না (কানের দুল ও গলার চেইন) নিয়ে পালিয়ে যান এবং আর ফিরে আসেননি।
নিরুপায় হয়ে সীমারানি প্রথমে বুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যা এডভোকেট খোকন চন্দ্র গোপের বাড়িতে যান। সেখানে চেয়ারম্যানকে না পেয়ে তিনি ওয়ার্ড মেম্বার নজরুল ইসলামের বাড়িতে যান। মেম্বারের পরামর্শে তিনি ২৫ সেপ্টেম্বর তার স্বামী শ্রাবণ সরকারের বাড়িতে পৌঁছান। সেখানে শ্রাবণের মা নিভা রানী সরকার তাকে মারধর করে বাড়ির বাইরে ফেলে রাখেন।
২৫ সেপ্টেম্বর রাতে গোপালপুর গ্রামে আরাধন সরকারের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ি তালাবদ্ধ এবং স্বামী বা পরিবারের কারো খোঁজ নেই। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় সীমারানিকে পাশের একটি ঘরে রাতে থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়।
অনশনকারী স্ত্রী সীমারানি হালদার দৃঢ়ভাবে জানিয়েছেন, তিনি তার স্বামীর অধিকার চান এবং ন্যায়বিচারের জন্য প্রয়োজনে আদালতের শরণাপন্ন হবেন।
এ বিষয়ে ওয়ার্ড মেম্বার নজরুল ইসলাম জানান, অনেক চেষ্টার পরও আরাধন সরকারের সাথে কোন সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি, তাই তিনি মেয়েটিকে আইনি আশ্রয় নিতে পরামর্শ দিয়েছেন। বুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট খোকন চন্দ্র গ্রুপ জানান তিনি বিষয়টি জানেন এবং সুষ্ঠু সমাধানের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন।