বিপ্লব সাহা, খুলনা ব্যুরো:
প্রকৃতি তার নিয়ম অনুযায়ী ঋতু পরিবর্তনের হাতছানিতে হেমন্তের মাঝপথে উঁকি দিচ্ছে শীতের আভা গভীর ও ভোররাতে ঠান্ডা হিমেল বাতাসে শীতে খেলছে লুকোচুরি তাই আজ ভোরে ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে ছিল খুলনা। সাথে হিম শীতল বাতাসে জড়োসড় হতে দেখা গেছে ফুটপাতে থাকা আশ্রাহীন মানুষদের।
গত কয়েকদিন ধরেই দিনের ভোর শুরু হচ্ছে শীতের আমেজে। চারপাশে কুয়াশার আস্তরণ বাতাসে হিমেল অনুভূতি। সন্ধ্যা রাতে হালকা গরম অনুভব হলেও ভোরের দিকে নতুন শীতের আগমনের পরশে জড়োসড় হতে হচ্ছে শরীর ঢাকতে হচ্ছে হালকা গরম কাপড়ে । সাথে ভোররাতে ঘরের বাইরে আবহাওয়াও তুলনামূলক বেশ ঠান্ডা। সব মিলিয়ে সকালের প্রকৃতিতে লক্ষ্য করা যাচ্ছে শীতের আমেজ।
যদিও নিয়ম অনুযায়ী দক্ষিণের লবণাক্ত এলাকাগুলোতে শীতের আগমন ঘটে একটু দেরিতে সেক্ষেত্রে এবার শীতের আগাম বার্তা নিয়ে এলো হিমেল বাতাস আর কুয়াশা। তবে দিনের মধ্যভাগ থেকে বিকাল পর্যন্ত থাকছে ভ্যাপসা গরম। আর এখন প্রকৃতিতে ঋতুবদলের আয়োজন। শরৎ শেষে হেমন্ত এসেছে। এরপর শীতকাল আসবে। কিন্তু এখনই প্রকৃতি জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। ভোরের কুয়াশার সাথে দেখা যায় শিশির ভেজা ঘাস। গভীর রাতের কুয়াশায় ভিজে যাচ্ছে রাস্তাঘাট ভিজে যাচ্ছে গাছ-গাছালির পাতা পানি জমে থাকতে দেখা যাচ্ছে টিনের ঘরের চালায়। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর একটু আগাম শীতের বার্তা দেখা দিচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে আর কয়েকদিনের মধ্যে পুরোদমে ঠান্ডার প্রভাব বিস্তার করবে।
আবার এরই মধ্য মাত্র কয়েকদিন আগে টানা বৃষ্টি হওয়ার ফলে মাঠে থাকা কৃষকদের শীতকালীন শাক-সবজির ক্ষতি হয়েছে ।তবে এবার বর্ষার শুরু থেকেই বর্ষার আনাগোনা ছিল প্রবল যার কারণে কৃষকদের নিচু জমিতে এখনো জলবদ্ধতা রয়েছে । সে ক্ষেত্রে নতুন করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থার মাধ্যমে জমি প্রস্তুত করে নতুন চাষাবাদের প্রক্রিয়ায় ব্যস্ত কৃষকরা।পাশাপাশি কৃষক রুবেল মিয়া বলেন এ বছর অধিক পরিমাণে বৃষ্টি সাথে ক্ষেতে ভাইরাসের জন্য বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন সবজি আগাম রোপন করা হয়েছিল তা নষ্ট হয়ে গেছে । তাই এই সময় সবজির দাম বেশি। এদিকে দিনে গরম থাকলেও মাঝরাতে মৃদু বাতাসে ঠান্ডা লেগে যায়। তাই মাঝরাতের পর থেকে হালকা শীতের কাপড় গায়ে না দিলেই ঠান্ডার অনুভূতি বাড়তে থাকে। শেষ রাত থেকে কম্বল বা হাল্কা কিছু গায়ে দিয়ে ঘুমানো লাগে।তবে আজকের সকালটা যেন হাল্কা শীতের পরশে আলাদা একটা অনুভূতি মনে হয়েছে। ঘুম ঘুম চোখে খুব সকালে জানালায় উঁকি মেরে বাইরে ঘন ধোয়ার মতন আবারন দেখে বোঝার চেষ্টা করছিলাম মেঘ নাকি কুয়াশা! নিশ্চিত হলাম কুয়াশা। সাথে শীত শীত অনুভূত হচ্ছিল। কয়েকদিন আগের টানা বৃষ্টির কারণে মৃদু ঠান্ডা শীতের আগাম বার্তা জানিয়ে দিয়ে যাচ্ছে। তাই এখন থেকে আমাদের শীতের প্রস্তুুতি নিতে হবে। তবে বরাবরের মতন সরকার যদি দেশের অসহায় খোলা আকাশের নিচে থাকা মানুষদের কথা বিবেচনা করে পুরোদমে শীত শুরু না হতেই সরকার যদি শীতবস্ত্র বিতরণ করেন তাহলে হয়ত নিম্ন শ্রেণির ছিন্নমূল মানুষেরা শীতের সাথে মোকাবিলা করতে পারবে। অপরদিকে খুলনা কৃষি অধিদপ্তর জানিয়েছে কয়েকদিন ধরে ভারী বৃষ্টি হওয়া উঁচু-নিচু জমির সবজি চাষে বৃষ্টির পানি ও শীতের কারণে বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস দেখা দিতে পারে বিধায় কৃষি বিভাগের মাঠপর্যায়ে কর্মীরা কারিগরি সহায়তাসহ বিভিন্ন রকমের পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষকদের । তবে প্রথম ধাপে পানির কারণে শীতকালীন সবজি নষ্ট হলেও দেরিতে রোপন করা সকল ধরনের শীতের ফসল আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করেন কৃষি বিভাগ।
একই সাথে খুলনা আবহাওয়া অধিদপ্তর জানান কুয়াশার সাথে শীতের তীব্রতা সম্ভাবনা রয়েছে পাশাপাশি এবছর শীতের অনুভূতিটা একটু বেশি থাকবে বলেও তিনি মনে করেন । গত কয়েকদিন ধরে এখানে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সহনীয় পর্যায়ে থেকে ওঠা-নামা করছে এবং আগামী নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে শীত বাড়বে।এবছর আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য মতে শীতের তীব্রতা একটু বেশি থাকার আগাম বার্তায় অসহায় ছিন্নমূল গরিব মানুষদের জন্য শীত মোকাবিলার প্রস্তুতি হিসেবে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। পাশাপাশি বর্তমানে দেশে নির্বাচিত কোন সরকার না থাকার কারণে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলীয় নেতাকর্মীরা দলীয় উদ্যোগে অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর কথা ও জানিয়েছেন।