মনিরুল ইসলাম মাহিম, খাগড়াছড়ি:
পানছড়ি ব্যাটালিয়ন (৩ বিজিবি) এর ৭৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বর্ণাঢ্য আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার ১২.৩০ ঘটিকায় পানছড়ি ব্যাটালিয়ন ৩ বিজিবি’র মাল্টিপারপাস ট্রেনিং সেডে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভা, কেক কাটা ও প্রীতিভোজের আয়োজন করা হয়। আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ি সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল মোঃ আব্দুল মোত্তাকিম। বিশেষ অতিথি ছিলেন ৩ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্ণেল মো. রবিউল ইসলাম, ৩২ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্ণেল কামরান কবির উদ্দিন, ৭ বিজিবির ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর এস. এম. ইমরুল কায়েস, পানছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানা নাসরিন। এসময় পানছড়ি থানা অফিসার ইনচার্জ মো: জসিম উদ্দিন, উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ, সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বিজিবির গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস তুলে ধরে একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। পরে ৩ বিজিবির ক্যাপ্টেন নাইমুল মুসফিক ব্যাটালিয়নের ৭৬ বছরের ঐতিহ্য ও সাফল্যের বিবরণ উপস্থাপন করে বলেন, ১৯৪৮ সালের ১ নভেম্বর সিলেটের শমসেরনগর থেকে ৩ বিজিবির যাত্রা শুরু হয়। ১৯৬১ সালে ব্যাটালিয়নটি স্থানান্তরিত হয় শ্রীমঙ্গলে। ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধ ও ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে অনন্য বীরত্বের পরিচয় দেয় ইউনিটটি, যেখানে ১৮ জন সাহসী সদস্য শহিদ হন। রাঙামাটি, সরাইল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, পিলখানা, কুষ্টিয়া ও ঠাকুরগাঁওসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দায়িত্ব পালন শেষে ১৯৯৯ সালে ব্যাটালিয়নটি পায় সম্মানজনক রেজিমেন্টাল কালার পতাকা। বর্তমানে ৩ বিজিবি খাগড়াছড়ি রিজিয়নের অধীনে ‘অপারেশন উত্তোরণ’-এর দায়িত্ব পালন করছে।
প্রধান অতিথি কর্নেল মো. আব্দুল মোত্তাকিম বলেন, “পাহাড়ের কঠিন ভৌগোলিক বাস্তবতায় পানছড়ি ব্যাটালিয়ন ৩ বিজিবি সবসময়ই দায়িত্ব পালনে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে। দেশের সার্বভৌমত্ব ও সীমান্ত নিরাপত্তা রক্ষায় বিজিবির প্রতিটি সদস্য অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। এ ধারা অব্যাহত রাখতে শৃঙ্খলা, সততা ও দেশপ্রেমের বিকল্প নেই।
পানছড়ি ৩ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ‘৭৭ বছরের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস নিয়ে ৩ বিজিবি ব্যাটালিয়ন আজ দেশের এক অনন্য প্রতিষ্ঠান। দেশের যে কোনো সংকট মুহূর্তে এই ব্যাটালিয়ন সর্বদা প্রস্তুত থাকে জনগণের পাশে দাঁড়াতে’। “আজ আমাদের জন্য এক গৌরবোজ্জ্বল ও স্মরণীয় দিন। পানছড়ি ব্যাটালিয়নের ৭৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করতে পেরে আমরা গর্বিত ও আনন্দিত।” পানছড়ি ব্যাটালিয়ন সীমান্তের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, মাদক ও অস্ত্র চোরাচালান প্রতিরোধ, মানব পাচার দমনসহ স্থানীয় জনসাধারণের নিরাপত্তা ও উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। শৃঙ্খলা হবে সীমান্তের নিরাপত্তা ও আত্মার প্রতীক” এই মূলমন্ত্রে অনুপ্রাণিত হয়ে পানছড়ি ব্যাটালিয়নের সদস্যরা দেশপ্রেম ও দায়িত্ববোধের সঙ্গে সীমান্ত রক্ষায় নিরলসভাবে কাজ করে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

