বিপ্লব সাহা, খুলনা ব্যুরো:
মহাসমারোহে ও নানান উৎসব আয়োজন এর মধ্যে দিয়ে এবারের মুল প্রতিপাদ্য পুলিশ- জনতা ঐক্য করি, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলি এই শ্লোগানকে সামনে রেখে আজ ৪ নভেম্বর শনিবার সকালে খুলনা-বয়রাস্ত পুলিশ লাইনস এর মাল্টিপারপাস হলে খুলনা মহানগর পুলিশিং ফোরাম এবং খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ব্যবস্থাপনায় কে এমপি কমিশনার মোঃ মোজাম্মেল হক বিপিএম (সেবা) ও পিপিএম (বার) এর সভাপতিত্বে এবং অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি
কেসিসি মেয়র আলহাজ্ব তালুকদার আব্দুল খালেক সহ উপস্থিত গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গগণ বেলুন ফেস্টুন ও পায়রা উড়িয়ে দিবসটির শুভ সূচনা ঘোষণা করেন।
এ উপলক্ষে সকাল ৯ টায় নগরীর বয়রা বাজার মোড় হতে এক বর্ণাঢ্য রেলি বের হয়ে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে কেএমপির পুলিশ লাইনে এসে শেষ হয়।
পরে আনুষ্ঠানিকতা শুরুর প্রথম পর্বে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত এবং ভগবত গীতা পাঠের মধ্য দিয়ে কমিউনিটি পুলিশিং ডে ২০২৩ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত বিশেষ আলোচনা সভার কার্যক্রম শুরু হয়।
আলোচনা সভার শুরুতে অনুষ্ঠানের সভাপতি খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ মোজাম্মেল হক বিপিএম বার ও পিপিএম সেবা উপস্থিত সকলকে সালাম ও শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য প্রদান করেন।
বক্তব্যের শুরুতে তিনি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি ইতিহাসের মহানায়ক মুক্তি যুদ্ধের মহান স্থপতি বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতার কতিপয় ঘাতকদের নির্মম বুলেটের আঘাতে শহীদ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু এবং বঙ্গবন্ধু পরিবারের সকল শহীদদের আত্মার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে রুহের মাগফেরাত কামনা করেন।
একই সাথে ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চের প্রথম প্রহরে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ যুদ্ধের শহীদ সকল পুলিশ সদস্য সহ ৩০ লক্ষ শহীদ মুক্তিযোদ্ধার আত্মার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে রুহের মাগফেরাত কামনা করেন।
এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের সম্ভ্রম হারানো ২ লক্ষ মা বোনের আত্মত্যাগের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এ সময় পুলিশ কমিশনারের বক্তব্যয় আরো বলেন পুলিশের সঙ্গে জনগণের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি ও অপরাধ দমনের অন্যতম কৌশল হিসেবে কমিউনিটি পুলিশিং বিশেষ ভূমিকা পালন করছে।
২০১৩ সালে স্বল্প পরিসরে পুলিশ সদর দপ্তরের উপ-মহা পরিদর্শক ডিআইজি অপারেশনের অধীনে পৃথক শাখা হিসেবে কাজ শুরু করেছিল। কমিউনিটি পুলিশিং
২০১৪ সালে একজন সহকারী মহাপরিদর্শক এ আইজির তত্ত্বাবধানে সেফটি এন্ড প্রিভিশন শাখার কার্যক্রম শুরু হয়। আর এটি এখন কমিউনিটি এন্ড বিট পুলিশিং নামে দেশব্যাপী কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে খুলনা মহানগরী এলাকায় ১০২ টি কমিউনিটি তে মোট ০১ হাজার ৮০৫ জন কমিউনিটি পুলিশ সদস্য হিসেবে কাজ করছে। তাদের কার্যক্রমের মধ্য রয়েছে ওপেন হাউজ ডে এর মাধ্যমে স্থানীয় সমস্যা নিয়ে মতবিনিময় সভা।
তাছাড়া সকল ধরনের পুলিশের কাজে সহযোগিতা ও বাল্যবিবাহ রোধ ইভটিজিং প্রতিরোধ জঙ্গিবাদ সন্ত্রাস দমন মাদকের কুফল নারী নির্যাতন যৌতুক বিরোধ মোবাইল ফোনের অপব্যবহার এবং সামাজিক মূল্যবোধ সংক্রান্ত সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এ সকল কার্যক্রমের মাধ্যমে সমাজে অপরাধ মূলক কর্মকাণ্ড কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।
এ সময় তিনি আরো বলেন বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শিতায় পুলিশ এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি পেশাদার স্মার্ট এবং সক্ষম একটি বাহিনী। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ শান্তিকামী মানুষের নির্বিঘ্নে চলাচল জীবন জীবিকা পরিচালনা করায় সহায়তা ও নিরাপত্তা দিতে বদ্ধপরিকর। এক্ষেত্রে শান্তি বিনষ্টকারী ও নাশকতা সৃষ্টিকারী কোন অপশক্তিকে বিন্দুমাত্র কোন ছাড় দেওয়া হবে না জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে এবং সকল প্রকার নাশকতা প্রতিহত করতে আমরা সদা প্রস্তুত। যেকোনো ধরনের নাশকতা এবং দুর্ভোগ মোকাবেলায় শতভাগ নিস্তার সাথে পুলিশ যাচ্ছে জনগণের জনমলে নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সাথে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ জনগণের পাশে থাকবে। খুলনা মহানগরী এলাকায় মাদক সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ শুনতে চাই না মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসীদের কঠোর হস্তে দমন করা হবে। এছাড়া তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী জুয়াড়ি দেহ ব্যবসায়ী এবং ভূমিদস্যু সকলকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
সবশেষে তিনি কেএমপি কে একটি চমৎকার গতিশীল ইউনিটে পরিণত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে একটি ক্ষুদাও দরিদ্র মুক্ত ইভটিজিং মুক্ত মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত যানজট মুক্ত এবং ভোজ দাড়ি অপরাধমুক্ত দেশ গড়ার প্রত্যাশা জানিয়ে তার বক্তব্য সমাপ্ত করেন।
আলোচনা সভার শেষের দিকে এক এমপিতে কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রমে অনবদ্য অবদানের জন্য কমিউনিটি পুলিশিং ডে ২০১ উদযাপন অনুষ্ঠানে শ্রেষ্ঠ কমিউনিটি পুলিশিং অফিসার সিপিও এবং কমিউনিটি পুলিশিং সদস্য সিপিএম দের সম্মাননা স্মারক ও সনদ বিতরণ করা হয়েছে। পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ঢাকা কর্তৃক চারজন এবং খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মহোদয়ের পক্ষ হতে চারজন কমিউনিটি পুলিশিং অফিসার সিপিও কমিউনিটি পুলিশিং সদস্যকে সিপিএম সম্মাননা স্মারক ও সনদ প্রদান করা হয়েছে।