জিয়া চৌধুরী (খুলনা জেলা প্রতিনিধি)
দৌলতপুরের পাইকারি বাজারে ডিমের দাম কমে গেলে ও দাম কমেনি খুচরা বাজারে। তাছাড়া দাম বেড়েছে আলু ও পেয়াজের। গত সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিকেজি আলুতে দাম বেড়েছে ৫ টাকা এবং পেয়াজে ২০ টাকা।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে দৌলতপুরের ডিমের বাজার ঘুরে দেখা যায় এমন চিত্র। ডিলাররা বাজারে মাঝারি সাইজের প্রতি হালি ডিম ৪৫ টাকা ২০ পয়সা এবং প্রতি ডজন ১৩৫ টাকা ৬০ পয়সা দরে বিক্রি করছে। যা গত সপ্তাহে ডিলাররা বিক্রি হয়েছে প্রতি ডজন ৪৮-৫০ টাকা এবং প্রতি ডজন ১৪৪-১৫০ টাকা দরে । এবং খুচরা বাজারে বিক্রি হয়েছে ১৫০-১৫৬ টাকা। গত শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) দৈনিক জন্মভুমি পত্রিকায় দৌলতপুরে সরকারের দেওয়া দামে বিক্রি হচ্ছে না ডিম শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর দৌলতপুরে পাইকারি বাজারে কমেছে ডিমের দাম। পাইকারি বাজারে প্রতি ডজন ডিমে দাম কমেছে ৯-১৫ টাকা পর্যন্ত। পাইকারি বাজারে ডিমের দাম কমে গেলে ও দাম কমেনি খুচরা বাজারে। দৌলতপুরের খুচরা বাজারে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৫৬ টাকা। পাইকারি বাজার দরের থেকে ক্রেতা কে প্রতি ডজন ডিমে বাড়তি গুনতে হচ্ছে ১৫-২১ টাকা পর্যন্ত। দৌলতপুরে কাজী ফার্মের ডিমের ডিলার হারুন জানান আমরা বাজারে এখন প্রতি পিচ ডিম ১১টাকা ৩০ পয়সা দরে বিক্রি করছি। যার প্রতি ডজন ডিমের দাম পরে ১৩৫ টাকা ৬০ পয়সা। আমরা ডিলারগণ ডিমের দাম কমালে ও খুচরা বাজারে ঠিক আগের দামেই ডিম বিক্রি করছে খুচরা ব্যবসায়ীরা।
দৌলতপুরের তাজ ডিম স্টোরের মালিক তাজ ও অন্যান্য ডিম ব্যবসায়ীরা বলেন ডিলাররা ডিমের দাম কিছুটা কমিয়েছে। তবে অনেক ডিলার ও ফার্মারা ভাউচারে দাম লিখছে কম আর বাস্তবে দাম নিচ্ছে বেশি। তাছাড়া দামের সময় ডিলাররা বাজারে যেমন ডিম দিতো এখন দাম কিছুটা কমানোর পরে বাজারে ডিম খুবই কম দিচ্ছে। তারা বাজারে ডিম কম দিয়ে খুচরা বাজারের ও গ্রাম অঞ্চলে বেশি দামে বিক্রি করছে।
ডিমের ডিলার বরি জানান আমরা এখন কম দামে ডিম কিনতে পারছি তাই কমে ডিম বিক্রি করছি। তবে আমরা যশোর থেকে আকিজের ডিম আমাদের দোকানে বসে কিনতে পারতাম এবং আকিজ গ্রুপ আমাদের এখানে গাড়িতে করে ডিম পৌঁছে দিয়ে যেতো। কিন্তু যশোরের ডিম ব্যবসায়ীরা আকিজের ডিম এখন আর খুলনায় আসতে দিচ্ছে না যার কারণে আমরা ডিম কম পাচ্ছি। সেকারণে বাজারে আগের মত ডিম দিতে পারছি না। আগের মত গাড়িতে করে যদি আকিজ গ্রুপ ডিম পৌঁছে দেয় তবে আমরা বেশি করে বাজারে ডিম দিতে পারবো। সরকারের নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে ও ভাউচারি বিহীন ডিম বিক্রি করার দায়ে গত বুধবার (২৩ অক্টোবর) ডিমের ডিলার রবি ও ফুলবাড়ি গেটের মুকুল কে ভোক্তা অধিদপ্তর জারিমানা করেন। দৌলতপুর বাজারে ডিম কিনতে আসা পাবলা শের-ই-বাংলা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা মোল্যা নজরুল ইসলাম বলেন, সরকার ডিমের দাম নির্ধারণ করে দিলে ও বাজারে সরকারের নির্ধারিত দামে ডিম বিক্রি হচ্ছে না। প্রতি ডজন ডিম ১৫০-১৫৬ টাকা দরে কিনতে হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিনিয়ত বাজার মনিটরিং করা দরকার। প্রতিনিয়ত বাজার মনিটরিং করলে অসাধু ব্যবসায়ীদের জরিমানার মধ্যদিয়ে সরকারের রাজস্ব আদায় হবে, পাশাপাশি সঠিক ও ন্যায়্য দামে ভোক্তারা পণ্যসামগ্রী ক্রয় করতে পারবে।
এছাড়া ডিমের পাশাপাশি আলু ও পেয়াজ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। দৌলতপুরে প্রতি কেজি আলু ৬০ এবং প্রতি কেজি পেয়াজ ১২০-১৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহে প্রতি কেজি আলু ৫৫ টাকা ও পেয়াজ ১০০-১১০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
হঠাৎ আলু ও পেয়াজের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্রেতাদের মধ্য দেখা দিয়েছে অস্থিরতা। কিছু দিন পর পর বাজারে বাড়ছে নিত্যপন্যর দাম। একের পর এক দাম বাড়ায় বিপাকে পড়ছে নিন্ম আয়ের মানুষ। দৌলতপুরে বাজার করতে আসা গৃহিনি আম্বিয়া বেগম বলেন সবজি ও ডিমের বাজারের অস্থিরতা কেটে উঠতে না উঠতেই আবার দাম বেড়েছে আলু ও পেয়াজের। এভাবে প্রতিনিয়ত নিত্যপন্যর দাম বাড়লে আমাদের মত নিন্ম আয়ের মানুষের সংসার চালানো খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়ায়।এছাড়া ঋণের পরিমান শুধু বাড়তে থাকে। দায়দেনায় জড়িয়ে সর্বশান্ত হয়ে যাই। সাধারণ মানুষের কথা বিবেচনা করে সরকারকে দ্রব্যমুল্যে নিয়ন্ত্রনে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।