বিপ্লব সাহা ,খুলনা ব্যুরো:
চলতি বছর বর্ষার মৌসুম শুরু থেকে প্রতিদিন কমবেশি বৃষ্টি হলেও গত দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে খুলনার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। অনেক এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে, যার কারণে রাস্তাঘাট ও বিভিন্ন স্থাপনা তলিয়ে গেছে। বিশেষ করে, নগরীর নিম্নাঞ্চল বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এতে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে।
বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতার কারণে খুলনা শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান যেমন- রয়েল মোড়, কেডিএ অ্যাভিনিউ, নিউমার্কেট এলাকা এবং বয়রা সহ বেশ কিছু এলাকা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। অনেক রাস্তা ও অলিগলিতে হাঁটু সমান পানি জমে গেছে, যা জনসাধারণের চলাচলে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। এমনকি অধিকাংশ মার্কেট শপিংমল গুলোতেও পানি ঢুকেছে ক্ষতি হয়েছে পণ্য সামগ্রীর, এদিকে মুষলধরা বৃষ্টির কারণে ঘর থেকে বের হতে পারছে না অনেকেই ফলে দোকানীদের বেচা কেনা নেমে এসেছে শুন্যের কুঠায় ব্যবসায়ীরা সকালেই দোকান খুলেছে অথচ সারাদিন বেঁচা বিক্রি না হওয়ার কারণে শূন্য হাতে ফিরতে হয়েছে ।
বৃষ্টির কারণেই ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। আবার কেউ কেউ ক্রেতার অভাবে সকাল সকাল দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে চলে গেছে,
অপরদিকে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষেরা টানা বৃষ্টিতে বেশি দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। সেখানকার মাছের ঘের ও ফসলের মাঠ পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় তারা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথা জানিয়েছে খুলনা শহরের আশপাশ এলাকা যেমন ডুমুরিয়া , সাহাপুর,বটিয়াঘাটা ও বিল ডাকাতিয়া এমনিতেই দীর্ঘদিন যাবৎ পানিবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে তার মধ্যে আবার আষাঢ়ের শুরু থেকে টানা বৃষ্টির কারণে আরো জলবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে স্থানীয় মৎস্য চাষী ও কৃষকরা। এদিকে অতি সমস্যায় পড়েছে দৈনন্দিন খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষ রাজমিস্ত্রি, মাটিকাটা কৃষাণসহ রিক্সাওয়ালারা, পাশাপাশি সমস্যায় পড়েছে খোলা আকাশের নিচে উন্মুক্ত জায়গায় ছোটখাটো ব্যবসায়ীরা । বিশেষ করে কৃষকরা ও ক্ষতির মুখে কারণ ফসলি জমির বৃষ্টির পানিতে ডুবে গিয়ে ফলন্ধর ফসল একেবারেই নষ্ট হয়ে যাওয়ার উপক্রম যার মধ্যে এমনও ফসল আছে যা একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে সেগুলো কোনক্রমেই বাজারে বিক্রি করার অবস্থা নাই। এসব গুলোর মধ্যে বেশি ক্ষতি হয়েছে মরিচ গাছ, লাউ গাছ, কুমড়া ,ভেন্ডি, উস্তে ,শসা সহ এই জাতের ফসল ।
যার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে শহরের খুচরা বাজারে তার মধ্যে একদিনের ব্যবধানে কাঁচা মরিচ কেজি ৮০ টাকা থেকে ৩০০ টাকায় ঠেকেছে । তবে গতকাল বৃষ্টির কারণে শহরের অধিকাংশ কাঁচাবাজারের দোকান খোলা পাওয়া যায়নি আর যে সকল এলাকায় দোকান খোলা ছিল নগরীর ময়লাপোতা সন্ধ্যা বাজার, নতুন বাজার ,রূপসা বাজারসহ ধন্যাঢ্য ব্যক্তিদের বাজারগুলো আর ওইসব বাজারগুলোতে স্বাভাবিক সময়ও পণ্যের মূল্য দ্বিগুণ দামে বিক্রি হয়ে থাকে তারপর আবার লাগাতার বৃষ্টির অজুহাতে তরিতরকারি বিক্রি হয়েছে অধিক চড়া দামে। তার মধ্যে আবার খুলনা আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিভাগীয় কর্তা চলমান বৃষ্টির ব্যাপারে আরো দুঃসংবাদ জানিয়ে বলেছেন চলমান বৃষ্টির পরিস্থিতি সমগ্র আষাঢ় মাস জুড়ে থাকবে এমনকি নদীতে পানি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে কারণ সামনের পূর্ণিমার যুগা আর পূর্ণিমা বা অমাবস্যার যুগা আসলে আবহাওয়ার বিরূপ লীলা খেলা পরিলক্ষিত হয় ফলে মৌসুম বৃষ্টির সাথে নদীর পানির চাপ বৃদ্ধি পেতে পারে। একই সাথে কৃষি অধিদপ্তর থেকে জানিয়েছে বর্ষার মৌসুমে বর্ষার প্রয়োজন তবে অধিক বর্ষা হলে ফসলের ক্ষেত্রে অনেক ক্ষতির সম্মুখীন সম্ভাবনা থাকে সাথে মৎস্য চাষীদের ও ক্ষতির আশঙ্কা একেবারে দ্বার প্রান্তে।