মশিউর মিলন,পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি:
পটুয়াখালীর বাউফলে মৃত প্রসূতিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল পাঠানোর অভিযোগে উপজেলার কালিশুরী বাজারের মাজেদা মেমোরিয়াল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি সোমবার (২৮ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে সিলগালা করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানা গেছে, ক্লিনিকে প্রসূতি মারা যাওয়া এবং মৃত প্রসূতিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল পাঠানোর অভিযোগে উপজেলার কালিশুরী বাজারের মাজেদা মেমোরিয়াল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালানো হয়। এসময়ে মাজেদা ক্লিনিক কতৃপক্ষ পলাতক থাকায় ক্লিনিকটি সিলগালা করা হয়েছে। এছাড়া কালিশুরী বাজারের নিউ লাইফ কেয়ার ক্লিনিকেও অভিযান পরিচালনা করা হয়। নিউ লাইফ কেয়ার ক্লিনিক কতৃপক্ষ ক্লিনিক পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে না পারায় ক্লিনিক ম্যানেজার এ কে আজাদ(৬৫)কে ৬মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়। আজাদ কাছিপাড়া ইউপির আ. রাজ্জাকের ছেলে।
উল্লেখ্য, শনিবার (২৬ আগস্ট) সকালে লিমার প্রসব ব্যাথা শুরু হলে লিমার পরিবার দুপুর ১২টার দিকে স্থানীয় মাজেদা মেমোরিয়াল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করান। ক্লিনিকের কর্তব্যরত চিকিৎিসক সিজারিয়ান অপারেশন করতে হবে বলে জানান। নিদিষ্ট টাকা চুক্তিতে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে লিমাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। সিজারে কন্যা সন্তান জন্ম দেন লিমা। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও লিমার জ্ঞান ফেরেনি। অপারেশন থিয়েটারেই মৃত্যু হয় লিমার। স্বজনরা বিষয়টি টের পেলে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ জানায় রোগী সুস্থ্য আছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল পাঠাতে হবে। ক্লিনিকের লোকজন তড়িঘড়ি করে লিমাকে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দেয়। লিমার স্বজনেরা বরিশাল না যেয়ে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক লিমাকে মৃত ঘোষনা করেন। চিকিৎসক মো. শোয়েব মাহমুদ কালবেলাকে জানান, লিমাকে মৃত অবস্থায় এখানে নিয়ে আসা হয়েছে। তিনি আনুমানিক এক দেড় ঘন্টা আগেই মারা গেছেন। এবিষয়ে “মৃত প্রসূতিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল প্রেরণ” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হলে টনক নড়ে প্রশাসনের।
সোমবার দুপুর ১টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বশির গাজি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার সাহা ও বাউফল থানা ভারপ্রাপ্ত র্কমকর্তা (ওসি) আরিচুল হক কে সাথে নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বশির গাজি বলেন, অবৈধ ভাবে গড়ে ওঠা বিভিন্ন ডায়াগনষ্টিক সেন্টার ও ক্লিনিকে অভিযান অব্যাহত থাকবে।