স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া
বগুড়ার আর কে ট্রাভেলসের একটি বাসের চালকের বিরুদ্ধে দশম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর নাটকীয় মোড় নিয়েছে ঘটনাটির । অভিযুক্ত চালককে আটক করা হলেও, পুলিশের হেফাজতে আসার পর ঐ কিশোরী তাঁর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এই ঘটনায় জনমনে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। যার কোনো কুলকিনার খুজে পাওয়া যাচ্ছে না।
জেলা গোয়েন্দা শাখার তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার ( ১৩ অক্টোবর ) রাতে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে আর কে ট্রাভেলসের চালক সোয়াইব হাসান ওরফে সাকিবকে আটক করে হাইওয়ে পুলিশ। পরবর্তীতে রাত পৌনে ১২টার দিকে তাঁকে বগুড়ার শাজাহানপুর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এদিকে পুলিশ জানায়, সোমবার সকালে ঢাকার গাবতলী থেকে বগুড়াগামী আর কে ট্রাভেলসের একটি বাসে সিরাজগঞ্জের কড্ডার মোড় থেকে ওই স্কুলছাত্রী ও তার এক বন্ধু ওঠেন। দুপুরে বাসটি বগুড়ার বনানী এলাকায় পৌঁছালে অন্যান্য যাত্রীরা নেমে যান।
পরে অভিযোগ ওঠে, যাত্রীরা নেমে যাওয়ার পর বাসচালক ও তাঁর সহকারীরা মেয়েটির বন্ধুকে ভয় দেখিয়ে বাস থেকে নামিয়ে দিয়ে চলন্ত বাসের ভেতরে মেয়েটির সঙ্গে চালক অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ করেন। পরে মেয়েটিকে ঠনঠনিয়া টার্মিনালে নিয়ে আসার পর কাউন্টার কর্তৃপক্ষের মধ্যস্থতায় গোপনে বিষয়টি ‘মীমাংসা’ করা হয় এবং মেয়েটিকে ঢাকাগামী অন্য একটি বাসে তুলে সিরাজগঞ্জে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ দ্রুত চালক সাকিবকে আটক করে।
এখন পরিস্থিতি পাল্টে গিয়ে পুলিশের হেফাজতে আসার পর ওই কিশোরী ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ফলে পুরো ঘটনাটিই নতুন করে প্রশ্নের মুখে পড়েছে। আলোচিত এই ঘটনা নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন সামনে এসেছে। ঘটনার পর- ধর্ষণের অভিযোগ তোলা কিশোরী কেন মোটর শ্রমিক নেতাদের মাধ্যমে পুলিশের কাছে এলেন ?
পুলিশের হেফাজতে আসার পরে কেনোই বা অভিযোগ অস্বীকার করলেন— এমন প্রশ্ন তুলছেন অনেকে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বগুড়া জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সামছুজ্জামান সামছু জানান, পুলিশের অনুরোধেই মেয়েটিকে সিরাজগঞ্জ থেকে বগুড়ায় নিয়ে এসে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
তবে, গণমাধ্যমের হাতে ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর একাধিক কলরেকর্ড এসেছে, যেখানে তিনি বিভিন্ন সময় তাকে ধর্ষণ সহ পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন বলে জানা যায়।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) এই প্রতিবেদনটি লেখা পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ থানায় জমা পড়েনি। শাজাহানপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, ভুক্তভুগী স্কুল ছাত্রী কে আমরা হাতে পেয়েছি সোমবার দিবাগত রাত ১২ টা ৫০ মিনিটে। ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রী ও অভিযুক্ত চালক বর্তমানে থানা পুলিশের হেফাজতে আছেন।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও মিডিয়া মুখপাত্র আতোয়ার রহমান বলেন, ভুক্তভোগীর পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে সেই অভিযোগের ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এখন প্রশ্ন থেকে যায়,
ধর্ষণের অভিযোগ সন্ধ্যায়, পরবর্তীতে অভিযুক্তকে আটক, অতঃপর রাতেই ভুক্তভুগির অভিযোগ অস্বীকার !
এই পুরো ঘটনা নিয়ে জনমনে তৈরি হয়েছে নানা প্রশ্ন ও সন্দেহ। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতেও এ নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা।
কি হতে চলেছে এই অন্ধকারে থাকা বিষয়টি নিয়ে ?