মনিরুল ইসলাম মাহিম, খাগড়াছড়ি:
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পানছড়ি উপজেলা শাখা কর্তৃক এক জরুরি সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
৩ ডিসেম্বর বুধবার বিকেল ৩টায় পানছড়ি প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা দাবি করেন, “জামায়াতের শতাধিক নেতাকর্মীর বিএনপিতে যোগদান”—এ ধরনের প্রচারণা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সংবাদ সম্মেলনে জামায়াত জানায়, ২ ডিসেম্বর বিএনপি তাদের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন নেতা ও আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের কিছু ক্যাডারকে নিয়ে ‘নতুন যোগদান অনুষ্ঠানের’ আয়োজন করে। এর আগে তারা জামায়াতের সহযোগী সদস্য ও নতুন কর্মীদের ভয়ভীতি ও হুমকি দেখিয়ে সেই অনুষ্ঠানে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু ব্যর্থ হওয়ার পর তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে “জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শতাধিক নেতাকর্মীর যোগদান” বলে প্রচার শুরু করে। জামায়াত এ বক্তব্যকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ দাবি করে এর তীব্র নিন্দা জানায়। এসময় জামাত নেতৃবৃন্দ, গতকাল জামায়াত নেতাকর্মীর বিএনপিতে যোগদান প্রসংগে যোগদানকারী কয়েকজনের প্রকৃত রাজনৈতিক পরিচয় তুলে ধরেন সংবাদ সম্মেলনে।
এদের মধ্যে মোঃ হোসেন (মোহাম্মদপুর), অতীতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন; আওয়ামী লীগের সুপরিচিত মুখ। মোঃ শুকুর আলী (ফাতেমা নগর), আওয়ামী লীগ আমলে উপজেলা যুবলীগের দায়িত্ব পালন করেছেন এবং সভাপতি প্রার্থী ছিলেন। মোঃ ফাহিম উদ্দিন (কলাবাগান), ৫ আগস্টের পর সহযোগী সদস্য হন; কোনো সময় জামায়াতের কার্যক্রমে সক্রিয় ছিলেন না। এমনকি কিছুদিন আগে নিজেকে এনসিপির সাধারণ সম্পাদক পরিচয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন—যার প্রমাণ জামায়াতের কাছে রয়েছে।
মোঃ ইউসুফ আলী (দমদম), গত দুই বছর ধরে জামায়াতের কোনো পদে নেই এবং কোনো সাংগঠনিক কার্যক্রমেও যুক্ত নন। ফরিদ মিয়া (হাসান নগর), তিনি কেবল সহযোগী সদস্য ছিলেন। জামায়াতের দাবি, ১ ডিসেম্বর রাতে বিএনপির কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা তার বাড়িতে গিয়ে ভয়ভীতি দেখায় এবং পরদিন মোটরসাইকেলযোগে তাকে জোরপূর্বক বিএনপি কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে ‘যোগদান’ করানো হয়। এ ঘটনায় তার ভিডিও সাক্ষ্যও জামায়াত সংগ্রহ করেছে।জামায়াতের বক্তব্য অনুযায়ী, যাদের ‘জামায়াতের নেতাকর্মী’ পরিচয় দেওয়া হচ্ছে—তাদের অনেকে মূলত আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের বিভিন্ন পদে ছিলেন। আবার কিছু অপরিচিত মুরব্বিকে ‘যোগদানকারী’ সাজিয়ে প্রচার করার অভিযোগও তুলে ধরেন তারা। সংগঠনের দাবি—এ বিষয়ে তাদের কাছে পর্যাপ্ত প্রমাণ সংরক্ষিত রয়েছে। এ ধরনের অপপ্রচারকে “সম্পূর্ণ মিথ্যা, সাজানো ও বিভ্রান্তিকর” বলে উল্লেখ করে জামায়াত জানায়—জনসমক্ষে ঘটনাগুলো ইতোমধ্যে পরিষ্কার হয়ে গেছে।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নেতৃবৃন্দ পানছড়ি উপজেলা শাখা বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে বলেন— “মিথ্যা প্রচারণা ও বিভ্রান্তিকর সংবাদ ছড়িয়ে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করবেন না। সুস্থ রাজনীতির পথে ফিরে আসুন।”
সম্মেলনে প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক আবুল কাসেম সাংবাদিকদের উদ্দেশে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন—“সত্য বিষয়গুলো মানুষের সামনে তুলে ধরতে আপনাদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।”

