নজরুল ইসলাম:
সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলায় কোটি টাকার মাটির কাজ শেষ না করেই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও এলজিডি কর্মকর্তাদের জোগসাজসে বিল উত্তোলন করার অভিযোগ উঠেছে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, কাজিপুরের সোনামুখী হতে ভানুডাঙ্গা এবং সোনামুখী হতে হরিনাথপুর বাজার পর্যন্ত প্রায় ৯ কিলোমিটার ১ কোটি ১৬ লাখ টাকা মাটির কাজ ধরা ছিল। মাত্র ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ মাটির কাজ করেই চূড়ান্ত বিল দেয়া হয়েছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে। এমনকি অসাধুপায় অবলম্বন করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে আড়াল করে প্রত্যয়ন ছাড়াই এই বিল দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট অফিস সূত্রে জানা যায়, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে সিরাজগঞ্জ এলজিইডির মাধ্যমে ২০২১ সালে কাজটি শুরু হয়। যাহার চুক্তিমূল্য ছিল প্রায় ৮ কোটি ৫ লক্ষ ১৮ হাজার ৮’শ ২৮ টাকা। এর মধ্যে মাটির কাজ ধরা ছিল প্রায় ১কোটি ১৬ লক্ষ টাকা এছাড়া রঙের জন্য ধরা ছিল ৮ লাখ ও খোয়া ধরা ছিল ২ কোটি ৩১ লাখ টাকা।
এ কাজ জয়েন্ট ভেন্চারের মাধ্যমে যৌথভাবে বাস্তবায়ন করে মেসার্স এম এ এন্টারপ্রাইজ ও মেসার্স বসুন্ধরা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান,
সোনামুখী থেকে হরিনাথপুর এবং সোনামুখী থেকে ভানুডাঙ্গা রাস্তায় রং করা এ রঙের স্থায়িত্বকাল ছিল মাত্র এক সপ্তাহ। যা পরবর্তীতে বৃষ্টিতে ধুয়ে উঠে গেছে। ঠিকাদার নির্বাহী প্রকৌশলী এবং এদের মধ্যস্ততাকারী উপ-সহকারী প্রকৌশলী যোগসাজশে মাটির কাজ, খোয়া কাজ এবং নিন্মমানের পাথর ব্যবহার করে কাজ করা হয়। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আড়াল করতেই, একক ক্ষমতার বলে নির্বাহী প্রকৌশলী অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর প্রত্যয়ন ছাড়াই চুড়ান্ত বিল প্রদান করে।
ভানুডাঙ্গা গ্রামের নান্নু সরকার অভিযোগ করে বলেন, এই রাস্তা করার সময় ঠিকাদার রাস্তায় খোয়ার পরিবর্তে পোড়া মাটি দিয়েছিলো আমরা গ্রামের মানুষ তখন বাধা দেওয়ার পর অফিসের লোকজন এসে ওই পোড়া মাটি কিছু নিয়ে যায় কিন্তুু বেশিরভাগই রেখে যায়।
স্থানীয় শিক্ষক আইয়ুব আলী জনান, মাটির কাজ বাবদ শুনেছি কোটি টাকা ধরা আছে, অথচ রাস্তার পাশ থেকে বেকো দিয়ে মাটি কেটে ফেলানো হয়েছে ।
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী হাবিব বলেন , এ বিষয় নিয়ে আমাদের পার্টনারদের মধ্যে গ্যাঞ্জাম হয়েছে। রাজশাহীতে তারা গিয়েছিল তদবীরের কাজ চলছে ওই প্রত্যয়নপত্র নেয়ার জন্য।
এ বিষয়ে কাজিপুর উপজেলা প্রকৌশলী জাকারিয়া জানান, তদন্ত টিম এসে দেখে গেছে কাজ সম্পূর্ণ না হওয়ায় কাজের ছাড়পত্র দিচ্ছে না তবে পরিপূর্ণ কাজ শেষ না করে বিল দেবার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি অফিসে ফাইল দেখে এ ব্যাপারে বলতে পারবেন বলে তিনি জানান।
সিরাজগঞ্জ এলজিডির নির্বাহী কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম জানান, কাজিপুরের চূড়ান্ত বিল বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আর কোন কথা না বলে ফোনটি কেটে রেখে দেন।
রাজশাহী অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (এলজিইডি) জুলফিকার আলী জানান, আমার কাছ থেকে এই কাজ বাবদ প্রত্যয়ন নেওয়ার কথা কিন্তু নির্বাহী প্রকৌশলী আমাকে না জানিয়েই বিল প্রদান করেছে। এই রাস্তায় কোটি টাকার মাটির কাজ ধরা ছিল। কাজ হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ ।