বিপ্লব সাহা খুলনা ব্যুরো:
খুলনায় এক মাসের ব্যবধানে ছয় খুনের নেপথ্যে রয়েছে মাদক কারবারীর সম্পৃক্ততা, খুলনা সদর থানা, লবণচড়া থানা, সোনাডাঙ্গা মডেল থানা ও খালিশপুর থানার দায়িত্ব রত কর্মকর্তাদের সুনির্দিষ্ট তথ্যে উঠে আসে খুন ও জখমের সাথে অতপ্রতভাবে জড়িয়ে থাকা শহর জুড়ে মাদক আগ্রাসনের ঘটনা।
পাশাপাশি নগরবাসীর অভিযোগ গত বছর পাঁচ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর থেকে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার কারণে খুলনা শহর মাদকে ভাসছে, আর সেই সুযোগে আগ্রাসন দখল করেছে মাদক কারবারীরা পলাতক মাদক ব্যবসায়ীরা শহর জুড়ে এখন ওপেন সিক্রেট।
ফলে শহরে যত্রতত্র পাওয়া যাচ্ছে গাঁজা, ফেনসিডিল, ইয়াবা, হিরোইন সহ অন্যান্য নেশা সামগ্রী। আর এই মাদক ব্যবসার আধিপত্য বিস্তার নিয়েই যত খুন যখম চাঁদাবাজি এলাকা দখল সবকিছু মিলে খুলনা এখন মৃত্যুর আতঙ্ক নগরীতে পরিণত হয়েছে।
প্রতিনিয়ত কোথাও না কোথাও ঘটছে সন্ত্রাসীদের মহড়া এতে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে নগরবাসীদের সর্বক্ষণ থাকতে হচ্ছে আতঙ্কে। মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসীরা সন্ধ্যা নামলেই যেন রামরাজত্ব পেয়ে প্রতিনিয়ত জন সম্মুখে গোলাগুলি অস্ত্র মহড়া এবং নৃশংস ভাবে কুপিয়ে যখম করা এ দৃশ্য যেন একেবারেই নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে পড়েছে।
পাশাপাশি এদেরই কারণে মাদক যেন এখন শহর জুড়ে অতি সহজলভ্য যা হাত বাড়ালেই এদের মাধ্যমে পাচ্ছে যেকোনো ধরনের মাদক দ্রব্য মাদক সেবীরা আর মাদক সেবন বা ক্রয়-বিক্রয় লেনদেন নিয়ে গ্রুপিং সৃষ্টি হয়,
ফলে অহরহ ঘটে চলেছে নৃশংস ঘটনা কেউ জখম হচ্ছে বা কেউ খুন হচ্ছে। তবে এসব বিষয়ে সাধারণ জনগণ আরো অভিযোগ করে প্রশাসনকে দোষারোপ করে বলেছে পুলিশ জানে শহরের কোথায় কোথায় মাদক বিক্রি হয়ে থাকে কারা কারা বিক্রি করে এবং সেবনকারী বা কারা।
অনেক সময় লক্ষ করা গেছে দিনের বেলায় ঐ সকল সন্ত্রাসী বা মাদক কারবারীরা প্রশাসনের লোকের সাথে বসে চায়ের আড্ডায় মশগুল থাকে সেক্ষেত্রে প্রত্যক্ষদর্শী ও সাধারণ জনগণের আরো অভিযোগ প্রশাসনের উদাসীনতার কারণেই ওই সকল ব্যক্তিরা নানাবিধ অপরাধ করেও পার পেয়ে যাচ্ছে।
অভিযোগ সূত্র থেকে বেরিয়ে আসে প্রশাসনের গাফিলতির কথা।
গোলাগুলি নৃশংস খুনের মত ঘটনা ঘটলে পুলিশ প্রশাসন কর্মকর্তাদের তাৎক্ষণিকভাবে যদিও তোড়জোড়নকরতে দেখা যায় পরবর্তী সময় কাদের ইঙ্গিত বা কোন কারণে নিষ্ক্রিয় হয়ে যাচ্ছে তা বোধগম্যর উপায় নাই সাধারণ মানুষের ফলে ধামাচাপা পড়ে যাচ্ছে অসংখ্য ঘটনা। গত দুইদিন আগে পরপর তিনটি খুনের ঘটনার পর শুক্রবার গভীর রাতে তার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে নগরীর লবণ চোরা থানাধীন কৃষ্ণনগর এলাকায় দুর্বৃত্তের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রাজ (২৫) নামের এক যুবক গুরুতর জখম হয়েছে। এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের তথ্যসূত্রে জানা গেছে এখানেও মাদকের সম্পৃক্ততা রয়েছে
আহত যুবক ওই এলাকার বাসিন্দা শাহাজাহান শেখের ছেলে।
রাজ মাদক কারবারিদের সাথে দীর্ঘদিন জড়িত ছিল এবং সে নিজেই এলাকায় মাদক বিক্রি করতো ঘটনার আগের থেকেই রাজ এবং প্রতিপক্ষ হালিম ও বাবুর সাথে এলাকাভিত্তিক মাদক বেচা বিক্রি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ ছিল।
এ বিরোধের জের ধরে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করতে থাকে ওই দুই যুবক। শুক্রবার রাতে সে সুযোগ পেয়ে আর হাত ছাড়া করতে চায়নি বাবু এবং হালিম। এদিন রাতে হালিম এবং বাবু চা-পাতি ও রামদা দিয়ে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। স্থানীয়রা বিষয়টি আঁচ করতে পেরে এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
পরবর্তীতে তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
লবণচরা থানার অফিসার ইনচার্জ তৌহিদুজ্জামন বলেন, মাদক কারবারির বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এ ঘটনার জের ধরে বাবু ও হালিম তাকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করতে থাকে। আহত যুবক রাজকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাতে ঢাকায় নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তার শারীরিক অবস্থা ভাল থাকায় আবার তাকে খুলনায় নিয়ে এসেছেন পরিবারের সদস্যরা। থানায় ওই দু’জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেলে লবণচড়া থানার অফিসার ইনচার্জ বিষয়টি আমলে নিয়ে তদন্তে মাঠে নেমেছে এবং তাদের গ্রেপ্তারের জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে বলে রাজের স্বজন ও স্থানীয়দের আশ্বস্ত করেছেন।
        
                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                
                                
                                
                                
                                