জেলা প্রতিনিধি, নড়াইল:
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় ছেলে আশরাফুল ইসলাম হত্যার বিচার চেয়ে সাবেক স্ত্রী মোছা. আয়েশা সিদ্দিকা ও নিজের আপন ছোট ভাই মো. আমিনুর ফকরের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী বাবা মো. মনিরুজ্জামান নামে এক ব্যক্তি।
বুধবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার লোহাগড়া প্রেসক্লাবের হলরুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মো. মনিরুজ্জামান নামে ওই ব্যক্তি এ অভিযোগ করেন।
মো.মনিরুজ্জামান উপজেলার নোয়াগ্রাম ইউনিয়নের দেবী গ্রামের মৃত আব্দুল মানান ফকিরের ছেলে।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরিকালে ২০০৮ সালে নলদী ইউনিয়নের চর-বালিদিয়া গ্রামের সিদ্দিক মুন্সির মেয়ে মোছা: আয়েশা সিদ্দিকাকে বিবাহ করেন। তাদের ২০০৯ সালের ১৭ মার্চ একটি পুত্র সন্তান জন্মগ্রহণ করে যার নাম মো. আশরাফুল ইসলাম। তার ছোটভাই ও স্ত্রীর মধ্যে পরকীয়া সম্পর্ক ছিলো। ২০১০ তিনি তার স্ত্রী ও সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে যেতে চাইলে তার আপন ছোট ভাই আমিনুর ফকির ও স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা তাকে মারপিট করে তাড়িয়ে দেয়। এরপর তিনি প্রথম স্ত্রী আয়েশাকে তালাক দিয়ে দ্বিতীয় বিবাহ করেন৷ এরমধ্যে মনিরুজ্জামান এর ছোট ভাই আমিনুর ও সাবেক স্ত্রী আয়েশা বিবাহ করেন। ২০১১ সালে তিনি ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী, পুলিশের সহায়তায় তার ছেলে আশরাফুল ইসলামকে আনতে গেলে তাকে পুলিশের সামনে অপমান করে তাড়িয়ে দেয় ছোট ভাই আমিনুর ও সাবেক স্ত্রী আয়েশা।
তিনি আরো বলেন, এ ঘটনার কয়েক মাস পর তার ছেলে আশরাফুলকে তার ছোট ভাই ও সাবেক স্ত্রী মিলে হত্যা করে ওই গ্রামের রিজাউল শেখ, তকব ফকির, আলমগীর ফকির, আয়ুব ফকির, বক্কার মোল্যা এবং ইউনুস শেখসহ অজ্ঞাত কয়েকজন ব্যক্তি মিলে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করেন। বিষয়টি ওই এলাকার মেম্বার হায়াতুর অবগত আছেন। এর মধ্যে আমার ছোট ভাই ও সাবেক স্ত্রীর একটি ছেলে সন্তান হয় যার নাম রাখা হয় আরিফুল ইসলাম।
তিনি বলেন, কিছুদিন পর খোরপোষ দাবি করে আমার সাবেক স্ত্রী আদালতে মামলা দায়ের করেন। যাতে আমার ছোট ভাই জবানবন্দি দেয় ও সাক্ষর করেন। সেই সময়ে নাশকতা মামলার ভয়ে আমি বাড়ি আসতে পারিনি। এরপর ২০২৪ সালে আমি বাড়িতে আসলে ঐ মামলায় আমাকে পুলিশ দিয়ে হয়রানি করা হয়। পরে বাড়িতে গিয়ে চেয়ারম্যান কতৃক প্রত্যয়ন সহকারে আদালতে পেশ করি। আমি প্রশাসনের কাছে আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই। তিনি বিষয়টি নিয়ে আদালতের দারস্ত হবেন বলেও জানান।
তবে এসব অভিযোগের ব্যাপারে মনিরুজ্জামান এর ছোট ভাই আমিনুর ফকির এর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে আরেক অভিযুক্ত আয়েশা সিদ্দিকার ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেন নি। যে কারনে তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে নোয়াগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (মেম্বার) হায়াতুর বলেন, মনিরুজ্জামান স্ত্রী আয়েশার সাথে তার ছোট ভাইয়ের অবৈধ সম্পর্ক ছিল। পরে মনিরুজ্জামান তাকে তালাক দেয়। তাদের আশরাফুল ইসলাম নামে একটি ছেলে সন্তান ছিলো। পরে ছেলেটি মারা গেলে স্থানীয় কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। তবে কি কারনে ছেলেটি মারা গেছে তা আমার জানা নেই।

