মশিউর মিলন, পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ
পটুয়াখালীর বাউফলে ত্রাস তান্ডব সৃষ্টি করিয়া বসতবাড়িতে হামলার ঘটনায় দ্রুত বিচার আইনের মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে জামিনে এসে বাদীকে হত্যার হুমকি দেয়া এবং মামলার সাক্ষী ও বাদীর নিকটাত্মীয়কে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা শনিবার (২৬আগস্ট) রাতে বাউফল থানায় দুটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
চলতি বছরের ৩০ জুন উপজেলার আদাবারিয়া ইউনিয়নের দক্ষিন মাধবপুর গ্রামে পারিবারিক জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে অব. সাবেক সেনা সদস্য আব্দুল মোতালেব মৃধার বাড়িতে দেশীয় অস্ত্রসহ হামলা চালায় তার ভাই ও ভাতিজারা। যার ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে যায়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ২ জুলাই ত্রাস তান্ডব সৃষ্টি করিয়া বসত ভিটার গাছ কাটাসহ বসতঘরে হামলার অভিযোগ এনে পটুয়াখালী দ্রুত বিচার আদালতে ভাই সানু মৃধা, জালাল মৃধা ও ভাতিজাসহ ৮ ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পুলিশের তদন্ত শেষে ৭জনের বিরুদ্ধে পটুয়াখালী দ্রুত বিচার আদালতে মামলা নং ১০৮/২৩ রুজু করা হয়। ২১ আগস্ট আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলে ২৪ আগস্ট চার আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায় পুলিশ। ওই দিনই গ্রেফতার চার আসামির জামিন মঞ্জুর করে বিজ্ঞ আদালত।
জিডি সূত্রে জানা যায়, ২৪ আগস্ট বিকেলে জামিনে এলাকায় এসেই আসামিরা মামলার সাক্ষী ও বাদীর পুত্র’র তাসনিমুল হাসানকে (১৭) মারধর করে। পরেরদিন ২৫ আগস্ট একই আসামিরা বাদীর বাড়িতে বেড়াতে আসা নিকটাত্মীয় কলেজ শিক্ষার্থী নাইমুল ইসলাম আশিককে হকস্টিক দিয়া পেটায়। এসময় আশিককে উদ্ধার করতে আসলে বাদীকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য খুন জখমের হুমকি দেয়া হয়। বাউফল থানা ১১৯৪ নং জিডি করেছেন দ্রুত বিচার মামলার বাদী ও ভিকটিমের বাবা আব্দুল মোতালেব মৃধা এবং ১১৯৫ নং জিডি করেছেন ভিকটিম নাইমুল ইসলাম আশিক। সাধারণ ডায়েরিতে (জিডি) জামিনে আসা আসামি সিদ্দিক মৃধা (২৮), আল আমিন মৃধা (২৬), জালাল মৃধা (৬৫) এবং তাদের সহযোগী সাব্বির সরদার (২৪) ও ইমরান মৃধাকে (৩০) অভিযুক্ত করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী মামলার বাদী ও অব. সেনা সদস্য আব্দুল মোতালেব মৃধা বলেন, ‘জামিনে এসেই সন্ত্রাসীরা আমার ছেলেকে মারধর করে এবং মামলা তুলে নিতে হুমকি দেয়। পরেরদিন সকালে ভাগ্নে আশিককে নিয়ে থানায় যাই। লিখিত অভিযোগ দিয়ে বাড়িতে পৌঁছাতেই সন্ত্রাসীরা আশিককে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করে। মামলা ওঠানো না হলে আমাদেরকে খুন করবে বলে হুমকি দেয়। এমন পরিস্থিতিতে পরিবার নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’
এ বিষয়ে জামিনে আসা আসামিদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। অপর অভিযুক্ত ইমরান মৃধা বলেন, বাদী মোতালেব মৃধার ছেলেকে মারধর করার অভিযোগ মিথ্যা ভিত্তিহীন। উলটো বাদীর ছেলে আমাদের এক ভাইকে চড় থাপ্পড় মেরেছে সেদিন। পরেরদিন আশিক পুনরায় আমার ভাইকে মারতে আসলে আমরা তাকে প্রতিহত করার চেষ্টা করি। এসময় ভাগ্নে সাব্বির আশিককে একটি লাঠির বারি দেয়। এছাড়ায় সকল অভিযোগ মিথ্যা বানোয়াট।
এ বিষয়ে বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এটিএম আরিচুল হকের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জিডি’র তদন্ত কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। জিডি’র তদন্ত কর্মকর্তা বাউফল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মনমথ হালদার বলেন, ‘সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছে। বিজ্ঞ আদালতে জিডি’র তদন্তের জন্য অনুমতি চেয়েছি। আদালতের অনুমতি পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’