মোঃ আশরাফুল ইসলাম,মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি ।
লক্ষাধিক মানুষের সমাগমে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশে সুষ্ঠভাবে শেষ হয়েছে আল্লাহর রাহে নিবেদিত হৃদয়ের মিলন মঞ্চ; তা’লিমে ইসলামের ৩ দিনব্যাপী বিশ্ব ইজতেমা ।
মানিকগঞ্জ পৌরসভার পটল বিল ময়দানে গত বুধবার ২৫শে ডিসেম্বর বাদ জোহর শরীয়তের ওপর বয়ানের মাধ্যমে ইজতেমার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন শায়খ তা’লিমে ইসলাম, মানিকগঞ্জ দরবার শরিফের প্রধান খলিফা,বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ,পীরে কামিল, মাওলানা – মুফতি, ডক্টর মুহাম্মাদ মনযুরুল ইসলাম ছিদ্দিকী।
ইজতেমায় আল্লাহর সন্তুষ্টি ও রাসূল (সাঃ)এর সাফায়াত লাভের আশায় জিকির-আজগারসহ ধর্মীয় আলোচনায় অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে সমবেত হয়েছিলেন ভক্ত-মুরিদানসহ প্রায় লক্ষাধীক ধর্মপ্রাণ মানুষ।
ইজতেমায় আল্লাহর সান্নিধ্য ইসলাম ও অন্যান্য ধর্মের আলোচনাসহ ইলমে শরীয়ত, মারিফাত,হাকিকত,তরিকত, কোরআন ও নামাজ শিক্ষা এবং কোরআন-সুন্নাহর ওপর আদর্শ জীবন গড়তে বিস্তারিত বয়ান ও আলোচনা করা হয়।
এই বিশ্ব ইজতেমার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে, চিশতিয়া ছাবিরিয়া তরিকার ২১টি ছবকের মাধ্যমে আধ্যাত্মিক মহাসাধনার মাধ্যমে মানুষের আত্মিক উন্নতি ঘটিয়ে আত্মশুদ্ধির ব্যবস্থা করে মহান স্রষ্টার সান্নিধ্য লাভ করে ইসলামের সু-শীতল ছায়াতলে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠা করা । ইজতেমায় দল, মত, জাতি, ধর্ম,বর্ণ নির্বিশেষে বিশ্ব মানবতার প্রতীক হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর জীবনাদর্শ ও আল্লাহ তা’আলার পরিচয় জ্ঞান নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
ইজতেমায় আগত পুরুষ ও নারীদের জন্য আলাদা প্যান্ডেল, নিরাপদ পানি, পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য টয়লেট ব্যবস্থাসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ফ্রী মেডিকেল ক্যাম্পের পাশাপাশি জরুরী প্রয়োজনের জন্য ছিলো এ্যাম্বুলেন্স ব্যবস্থা।
ইজতেমার নিরাপত্তায় সিসি ক্যামেরা,ওয়াচ টাওয়ারের পাশপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বিপুল সংখ্যক পুলিশের পাশাপাশি কাজ করছে সেনাবাহিনী, র্যা ব ও পুলিশের গোয়েন্দা শাখাসহ প্রায় ৫ শতাধীক স্বেচ্ছাসেবক ।
ইজতেমাকে কেন্দ্র করে চারপাশেই বসেছিলো খাদ্য,বস্ত্র,তৈজসপত্র, খেলনা ও খাবার হোটেলসহ বিভিন্ন পণ্য সামগ্রীর অস্থায়ী দোকান-পাট ,যা ইজতেমার পরিবেশকে আরো জমজমাট করে তুলেছিলো।
শনিবার ২৩ শে ডিসেম্বর সকালে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয় ৩দিনব্যপী এই বিশ্ব ইজতেমা । মোনাজাতে আল্লাহর কাছে পাপ থেকে মুক্তি, বিশ্ব শান্তি ,ইহকাল ও পরকালীন কল্যাণ প্রার্থনা এবং দেশবাসীর জন্য দোয়া করা হয়।মোনাজাত পরিচালনা করেন শায়খ তা’লিমে ইসলাম, আলহাজ্ব হযরত মাওলানা, মুফতি ডক্টর মুহাম্মাদ মনযুরুল ইসলাম ছিদ্দিকী।