মো. মোরসালিন ইসলাম
দিনাজপুর প্রতিনিধি
দিনাজপুরের পার্ব্বতীপুরে কৃষকের আমনের চারা নষ্টের অভিযোগ
আমন ধানের চারার সাথে এ কেমন শক্রতা!কাঁদছেন অসহায় দরিদ্র দিনমজুর কৃষক বাবলু মিয়া।
পার্ব্বতীপুরের হরিরামপুর গুড়গুড়ী উত্তরপাড়া গ্রামের বাবলু মিয়ার কষ্টের রোপণকৃত ৩৩শতক জমির আমন ধানের চারা গাছ উপড়ে ফেলে পিষ্ট করে কাঁদা-মাটির নিচে থেতলিয়ে নষ্ট করে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।এমন অভিযোগ করেছেন ওই অসহায় দরিদ্র কৃষক।
দুর্বৃত্তরা দরিদ্র দিনমজুর বাবলু মিয়াকে সর্বশান্ত করতে প্রকাশ্যে শক্রতা শুরু করে।সম্প্রতি পার্ব্বতীপুরের হরিরামপুর ইউপি’র গুড়গুড়ী উত্তরপাড়ায় এঘটনা ঘটে।ফলে ওই কৃষকের প্রায় ৩০হাজার টাকার ক্ষতি সাধন হয়েছে।
এই ঘটনার পর অসহায় বাবলু মিয়া বিচার চেয়ে ধরণাও দিচ্ছেন বিভিন্ন জনের কাছে। কিন্তু কোথাও বিচার না পেয়ে অবশেষে গত(১৬জুলাই) ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক বাবলু বাদী হয়ে ১৩জনের নামে পার্বতীপুর মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।এদিকে অভিযোগের ২৮দিন পেরিয়ে গেলেও অদৃশ্য কারণে দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে আইনি কোন ব্যবস্থা নেইনি পার্বতীপুর মডেল থানা পুলিশ ও মধ্যপাড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্র।
অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে,
গুড়গুড়ী উত্তরপাড়ার মৃত মোকলেছ উদ্দিন গাছুয়ার ছেলে বাবুল মিয়া ১৯৮৯ সাল থেকে অদ্যবধি তিনি তার নিজ নামিও দলিল কৃত ৩৩শতাংশ জমি ভোগ দখল করে ফসলাদি ফলিয়ে আসছিলেন।প্রতি মৌসুমের ন্যায় এবারো ওই জমিতে রোপা-আমন ধানের চারা রোপন করেন।৩দিন পর গত(১৫জুলাই) সন্ধ্যায় দুর্বৃত্তরা মজিবুল,মফিজুল,শফিকুল,
আব্দুল মোন্নফ,
শাহিদার,মেনহাজুর,রুহুল আমিন,রেজাউল করিম,
মোস্তাফিজুর,মামুনুর রশিদ,খাদিমুল,আনজুয়ারা ও সুরাইয়াসহ আরো ৫জন সকলে এক জোট হয়ে জমিতে অনধিকার প্রবেশ করে রোপন কৃত আমন ধানের চারা জোর পূর্বক উপড়ে ফেলে পা দিয়ে পিষ্ট করে কাঁদা মাটির নিচে আমন চারা গুলোকে নষ্ট করে পুঁতে রেখেছেন।এই বর্বর দৃশ্য দেখে অসহায় দরিদ্র দিনমজুর বাবুল মিয়া হাউমাউ করে কাঁদতে-কাঁদতে জমিতে গিয়ে বাধা নিষেধ করলে দুর্বৃত্তরা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে।এক পর্যায় কৃষক বাবলু মিয়াকে এলোপাথাড়ি কিল ঘুষি মারতে থাকে।এক পর্যায়ে অসহায় বাবলু জ্ঞান হারিয়ে জমিতে পড়ে থাকে।পরবর্তীতে এলাকাবাসি তাকে উদ্ধার করে তার বাড়িতে নিয়ে আসে।এরপর মুজিবুল বাংলা আহত বাবলু পরিবারের সদস্যরা দিনভর অবরুদ্ধ করে রাখে।
বাবুল মিয়া বলেন,১৯৮৯ সালে বাবা তার সম্পত্তির অংশ লিখে দিয়ে দলিল হস্থান্তর করেন আমার কাছে। আমি তখন থেকে তফশিল বর্ণিত সম্পত্তি ভোগদখল করে আসছি।কিন্তু সম্প্রতি বাবার মৃত্যুর পর বাবার আত্মীয় স্বজনরা আমার সমস্ত সম্পত্তি জবর দখলপূর্বক আমার পরিবারকে সম্পত্তি থেকে উচ্ছেদ করার চেষ্টায় লিপ্ত হয়ে উঠেছে। এরাই আমার রোপনকৃত আমন ধানের চারা নষ্ট করেছে।আমি এই ঘটনার প্রতিবাদ করায় মজিবুল গংরা এতসব অত্যাচার করছে।
এমনকি আমি থানায় অভিযোগ করার পর অভিযোগটি তুলে নেয়ার জন্য আমাকে প্রতিনিয়ত প্রাণনাশের হুমকী দিচ্ছে তারা।
এই অন্যায়-অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বাবলু মিয়া ইতোপূর্বেও ২০২১ সালে মধ্যপাড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে একটি সাধারণ ডায়েরী করেন।যার নং ১৪৫। তারপর ২০২২ সালে দিনাজপুর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে একটি মামলা করেন যার নং ২৩০/২০২২। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে কৃষক বাবলু মিয়ার ওই ৩৩ শতক জমিতে মজিবুল, মফিজুল,শফিকুল গংদের অন্তবর্তীকালিন জমিতে নামতে নিষেধাজ্ঞা দেয় আদালত।এরপর হরিরামপুর ইউনিয়ন পরিষদ গ্রাম আদালতে একটি লিখিত অভিযোগ করলে চেয়ারম্যান জমির কাগজপত্র পর্যালোচনা করে জমির দলিল বাবলু মিয়ার নিজ নামে সঠিক থাকায় বাবলু মিয়াকে এক তরফা রায় দেয় চেয়ারম্যান।আইনের এই সমস্ত সত্য রায় দেখে দুর্বৃত্তরা আইনকে তোয়াক্কা না করে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে পেশী শক্তির বলে অন্যের জমি জোর পূর্বক দখলসহ প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছে।তবে দলিল মুলে বাবুল মিয়া ওই জমির প্রকৃত মালিক হলেও বাহুশক্তির বলে মজিবুল,মফিজুল,
শফিকুলসহ তার লোকজন অন্যায় ভাবে জমিটি অবৈধ দখলের পায়তারা করছে।
অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা মধ্যপাড়া তদন্তকেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক হারুন অর রশীদ জানান, অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। এক প্রশ্নে উত্তরে বলেন কৃষক বাবলু মিয়ার জমির ধানের চারা উপরে ফেলা ঘটনাটি সত্য।তিনি আরো বলেন, মজিবুল ইসলামের লোক জনদের বিষয়টি জানার জন্য ডাকলে তারা আসেনি।
পার্বতীপুর মডেল থানার ওসি আবুল হাসনাত খাঁন জানান,বাদীর অভিযোগ পেয়ে তদন্তর জন্য মধ্যপাড়া তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।তদন্তর সত্যতা পাওয়া গেলে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।