জাহাঙ্গীর আলম, ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধিঃ
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার সাফদারপুর দারুল উলুম আলিম মাদ্রাসার উদ্যোগে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (১৭ই এপ্রিল) সহকারী অধ্যাপক মাওলানা নুরুন্নবী এর উপস্থাপনায় এবং অধ্যক্ষ মাওলানা জাকির হোসাইন এর সভাপতিত্বে এ দিবস পালিত হয়।
বক্তব্য পেশ করেন অত্র মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা জাকির হোসাইন। তিনি বলেন ১৭ এপ্রিল ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের সুদীর্ঘ ইতিহাসের অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে তৎকালীন কুষ্টিয়া জেলার মেহেরপুর মহকুমার বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রথম মন্ত্রিসভা শপথ গ্রহণ করে। রচিত হয় স্বাধীন বাংলাদেশের নতুন ইতিহাস। ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল গঠিত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র।
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এর তিন সপ্তাহ পর বৈদ্যনাথতলা নামে পরিচিত ঐ বিশাল আমবাগান এলাকাকেই পরে ‘মুজিবনগর’ নাম দিয়ে বাংলাদেশের অস্থায়ী রাজধানী ঘোষণা করা হয়েছিল। বাংলাদেশকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দখলমুক্ত করতে মুজিবনগর সরকারের নেতৃত্বেই পরিচালিত হয় সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ।
অস্থায়ী সরকারের সফল নেতৃত্বে দীর্ঘ ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে।
সেই মাহেন্দ্রক্ষণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি ও মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়ক, সৈয়দ নজরুল ইসলামকে উপরাষ্ট্রপতি, তাজউদ্দীন আহমদকে প্রধানমন্ত্রী এবং ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী ও এ এইচ এম কামারুজ্জামানকে মন্ত্রিসভার সদস্য করে স্বাধীন বাংলা অস্থায়ী বিপ্লবী সরকার গঠন করা হয়। পাকিস্তানের কারাগারে বন্দী বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে উপরাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামকে করা হয় অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি। এই দিন স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ ও অনুমোদন হয়। আওয়ামী লীগের চিফ হুইপ দিনাজপুরের সংসদ সদস্য অধ্যাপক মো. ইউসুফ আলী গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন এবং অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথবাক্য পাঠ করান।
এছাড়াও বক্তব্য পেশ করেন ভাইস প্রিন্সিপাল মাওলানা আল মারুফ।
তাছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন সহকারী অধ্যাপক মাওলানা হাফেজ আব্দুল করিম, সহকারী অধ্যাপক আবুল বাশার, আরবী প্রভাষক মাওলানা রফিকুল ইসলাম, প্রভাষক মেরিনা সুলতানা, সহকারী শিক্ষক আক্তারুজ্জামান পিন্টু, আনোয়ার হোসেন, মফিজুর রহমান, রবিউল ইসলাম, আতিয়ার রহমান, আব্দুল খালেক, আব্দুল মালেক, মোমিনুর রহমান, রুপালি খাতুন, সীমা খাতুন, জাহাঙ্গীর আলম, হাফিজুর রহমান প্রমুখ।
দেশের জন্য শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মুনাজাত করেন সহকারী মৌলভী শিক্ষক মাওলানা রবিউল ইসলাম।