জেলা প্রতিনিধি নড়াইল
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) অনিমেষ বিশ্বাসের অশ্লীল ভিডিও(এডাল্ট) ফাঁস করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ১০ লক্ষ চাঁদা আদায়ের ঘটনায় ইউএনওর স্ত্রী বিপাশা বিশ্বাস বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় পুলিশ ইউএনওর দেহরক্ষী আনসার সদস্য আকাশ বিশ্বাসকে (২৭) আটক করে কারাগারে পাঠিয়েছে। গ্রেফতারকৃত আকাশ খুলনার জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার রংপুর গ্রামের নিহার বিশ্বাসের ছেলে এবং লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের দেহরক্ষী হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে , গত ১৭ ফেব্রæয়ারি অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে হোয়াটসঅ্যাপে কল করে বলে, একটি অশ্লীল এডাল্ট ভিডিও আছে তাদের কাছে। এর জন্য ১০ লাখ টাকা না দিলে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করে দেয়া হবে বলে ভয় দেখায়। এভাবে একাধিকবার অজ্ঞাতনামা চাঁদাবাজরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও তার স্ত্রীর মুঠোফোনে হুমকি দিয়ে বলে,দাবীকৃত টাকা না দিলে এবং এ কথা কাউকে জানালে অনিমেষ বিশ্বাসকে জখমসহ হত্যা করা হবে।
ভয়ে ইউএনওর স্ত্রী বিপাশা বিশ্বাস তার স্বামীর সম্মান ও জীবনের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে হুমকিদাতার ব্যাংক একাউন্টে ওই দিন রাতে ৮ লাখ ৯৪ হাজার টাকা দেয়। টাকা পাঠানোর জন্য গাড়ী নিয়ে লক্ষীপাশাস্থ ব্রাক ব্যাংক এটিএম বুথে যান । এ সময় গাড়িতে থাকা ইউএনওর দেহরক্ষী আনসার সদস্য আকাশ বিশ্বাস তাকে পরামর্শ দেয়, ডাচ বাংলা ব্যাংকের বুথ থেকে ওই একাউন্টে দ্রæত টাকা পাঠানো যায়। এ কথায় আনসার সদস্য আকাশের প্রতি সন্দেহ হয়। পরবর্তিতে বিভিন্ন সময় পর্যায়ক্রমে আরো ১লক্ষ ৬ হাজার টাকা দেন। এর পর চাঁদাবাজরা আরো ৩ লক্ষ টাকা দাবী করে । উপায়ান্ত না পেয়ে গত ১২ মার্চ ইউএনওর স্ত্রী বিপাশা বিশ্বাস বাদী হয়ে এ ঘটনায় আকাশের কথা উল্লেখ করে একটি চাঁদাবাজ চক্রের নামে মামলা দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে ইউএনও এবং বাদীর সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। অভিযুক্ত দেহরক্ষী আকাশের ভাই সমীর বিশ্বাস বলেন, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার প্রকৃত রহস্য উন্মোচন করা হোক।
লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাঞ্চন রায় বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, চাঁদাবাজির মামলায় অভিযুক্ত আকাশ বিশ্বাসকে বুধবার লক্ষীপাশা বাসষ্টান্ড থেকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। চাঁদাবাজ চক্রকে ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।