মোঃ রইস উদ্দিন(রিপন)স্টাফ রিপোর্টার নারায়ণগঞ্জঃ
নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁয়ে দূর্গা পূজার মন্ডপগুলোতে একদিকে বিসর্জনের বিষাদময় উৎসব,অন্যদিকে সিঁদুরে রাঙা খেলার আনন্দ।নানান রকম জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনের মাধ্যমে বিজয় দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে, শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হলো ৫ দিন ব্যাপী সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা।ফলে আনন্দ বিষাদে ভরে আছে ভক্তদের অন্তর।নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর,লাল সাদা শাড়ি পরে শত শত গৃহিণী বরণডালা ও সিঁদুরের কৌটা হাতে নিয়ে হাজির হয়।গৃহিণীরা দেবী দুর্গার চরণ স্পর্শ করে সঙ্গী বা উপস্থিত অন্য ভক্তদের কপালে কপােল সিঁদুর মাখিয়ে দিচ্ছেন।এ বৎসর নারায়ণগঞ্জ জেলায় মোট ২২৪ টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।এর মধ্যে রূপগঞ্জে ৪৬ টি,আড়াইহাজারে ৩৪ টি,সোনার গাঁয়ে ৩৫ টি,বন্দরে ২৯ টি ও নারায়ণগঞ্জ সদরে ৮০ টি।সারা বাংলাদেশের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলার পূজা সব সময় জমকালো আয়োজনে হয়ে থাকে।তাই নারায়ণগঞ্জ জেলায় পূজা করতে রাজধানী ঢাকা, কুমিল্লা,নরসিংদী ও মুন্সিগঞ্জ সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা পূজা করতে আসেন।বিশেষ করে,সোনারগাঁও উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের কামারগাঁও এবং ইছবগঞ্জ(মাঝিপাড়া) এলাকায় বিভিন্ন এলাকা হতে আগত অতিথিদের আগমন বেশি দেখতে পাওয়া যায়।আজ মঙ্গলবার বিজয় দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের উদ্দেশ্যে,মোগরা পাড়ায় কামারগাঁও এলাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও পূজা মণ্ডপের সভাপতি শ্রী সুমন দত্ত এবং সাধারণ সম্পাদক শ্রী বিশ্বনাথ দত্তের বাড়িতে হাজারেরও বেশি পূজা পূর্ণর্থীরা ভীড় জমান বিকাল থেকে।শ্রী শম্ভুনাথ দত্ত ও শ্রী লোকনাথ দত্তের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে বিভিন্ন এলাকা হতে কামারগাঁও পূজা মন্ডপে পূজা অর্চনা করতে আসেন।দুর্গা মায়ের এক ভক্ত জিকু বলেন-সোনারগাঁয়ের কামারগাঁও এলাকার পূজা মন্ডপটি অনেক গুছানো ও পরিপাটি এবং নিরাপত্তার দিক দিয়ে ভালো থাকায় আমরা এখানে পূজা করতে আসি।কামারগাঁও পূজা কমিটির সভাপতি শ্রী সুমন দত্তের তত্ত্বাবধানে,দুর্গা মায়ের সাজসজ্জা পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে নিয়ে আসায়,দেবী দুর্গা অন্যান্য মণ্ডপের থেকে অনেক সুন্দর এবং পূজা প্রেমী যে কারো নজর কারবে।সোনারগাঁও উপজেলায় দুর্গা দেবী বিসর্জনে জায়গা ক্ষেত্রে পূজা মণ্ডপের পার্শ্ববর্তী নদীতে প্রতিমা বিসর্জন দিয়েছেন।প্রতিমা গুলোকে পূজা মণ্ডপ থেকে ভ্যান গাড়িতে সুন্দরভাবে স্থাপন করে,বিসর্জনের জন্যে ঘাটে নিয়ে আসা হয়।তবে শ্রী সুমন দত্তের কামারগাঁও এলাকার পূজা মন্ডপের প্রতিমা বিসর্জনের ক্ষেত্রে আইনি নিরাপত্তায়,মোগরা পাড়া সানগাট এলাকার বটতলার মেরী খালী নদীতে হাজারো ভক্তবৃন্দের উপস্থিতিতে ঢাক,ঢোল,নিত্য ও উলুধ্বনিতে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়েছে।দেবী বিসর্জনের পর এই সিঁদুর মূলত বিবাহিত নারীদের একটি মঙ্গলীক আচার।স্বামী সংসারের মঙ্গল কামনা করে সবাই বরণ ডালা সাজিয়ে বা সিঁদুরের কৌটা সঙ্গে নিয়ে আসেন।এই সিঁদুর দেবির চরণ স্পর্শ করিয়ে কৌটায় করে সংরক্ষণ করেন এবং সারা বছর ব্যবহার করে থাকেন।দেবীর জন্য যারা বরণ ডালা সাজিয়ে আনেন তাতে থাকে ধাঁন,দুব্বা,বেলপাতা,কাঁচা হলুদ, কড়ি এবং যে কোন রকমের একটি ফুল নাড়ু ও মিষ্টি।এই বরন ঢালা নিয়েই দেবী প্রণাম করে ঘরে ফিরেন তারা।সোনার গাঁয়ের প্রতিটি মণ্ডপে বিকেলে সিঁদুর খেলার আয়োজন করা হয়েছ।সন্ধ্যার পর থেকে প্রতিমা মন্দিরগুলো থেকে শোভাযাত্রা করে নিয়ে যাওয়া হয়,বিসর্জনের স্থান মোগরাপাড়া বাজার সংলগ্ন বটতলার শানঘাট এলাকার মেরি খালী নদীতে।বটতলা ঘাটের নদীতে দেবী দুর্গার প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়।শ্রী লোকনাথ দত্ত,শ্রী শম্ভুনা দত্ত,মন্ডপের সভাপতি শ্রী সুমন দত্ত ও সাধারণ সম্পাদক শ্রী বিশ্বনাথ দত্ত বলেন-এবার দেবী এসেছে ঘোটক,যাচ্ছেন ও ঘোটকে।এর তাৎপর্য হলো বিশ্বে উত্তেজনা বাড়বে।তবে দেবীর চরণে অঞ্জলি দিয়ে তারা সকলের জন্যে শান্তি আর কল্যাণী কামনা করেন।