নজরুল ইসলাম:
ভারত মহাসাগরে জলদস্যুদের কবলে পড়া জাহাজে জিম্মি ২৩ বাংলাদেশির মধ্যে সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার মো. নাজমুল হকও (২৩) রয়েছেন। তাঁর মা নার্গিস খাতুন বলেন, ‘রাত ১১টার দিকে ছেলে ফোন দিয়ে বলে, “মা, আমাদের ২৩ জনকে আটকে রেখেছে। এর মধ্যে সাতজন বড় স্যার আছে। আমাদের জন্য দোয়া করো।” এই বলে আমার বুকের মানিক ফোন কেটে দেয়।’
নাজমুল হকের বাড়ি উপজেলার চর নুরনগর গ্রামে। আজ বুধবার সকালে সরেজমিন গিয়ে কথা হয় তাঁর স্বজনদের সঙ্গে। এ সময় কান্নাজড়িত কণ্ঠে নাজমুলের মা নার্গিস খাতুন আরো বলেন, ‘আমার ছেলের প্রাণভিক্ষা চাই। এই ছেলেটা আমাদের খুব যত্নের। এই ছেলের টাকায় আমাদের সংসার চলে।’
প্রতিবেশীরা জানায়, কৃষক আবু সামা শেখের দুই সন্তানের মধ্যে নাজমুল হক ছোট। বড় বোন লিপি খাতুনের পাশের গ্রামে বিয়ে হয়। নাজমুল উল্লাপাড়া উপজেলার বিএমএস টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট থেকে ২০১৭ সালে এসএসসি ও ২০১৯ সালে এইচএসসি পাস করে জাহাজে চাকরি নেন। তবে তিনি কোন পদে চাকরি করছেন, এ বিষয়ে তাঁর পরিবার বা প্রতিবেশীরা কেউ কিছু জানাতে পারেনি।
চোখের জল অবিরাম ঝরছে, ভালো করে কথা বলতে পারছেন না নাজমুলের বাবা আবু সামা শেখ। বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন তিনি।
বড় বোন লিপি খাতুন বলেন, ‘ভাইয়ের বিপদের কথা শুনে মা-বাবা খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দিয়েছে। তাতে আরো ওনারা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। সরকারের কাছে আমার অনুরোধ, আমার ভাইকে যেন দ্রুত ফিরিয়ে আনা হয়।’