মুফতি খোন্দকার আমিনুল ইসলাম আবদুল্লাহ ।
১. সব ধরনের গু’নাহ থেকে বাঁচার আপ্রাণ চেষ্টা করতে হবে। বিশেষ করে দেখা ও শোনার গু’নাহ। কারণ, এ দুই গু’নাহ কলবকে কলুষিত করে ফেলে। কলবে জুলমত-অন্ধকার সৃষ্টি করে। আমলের স্বাদমজা নষ্ট করে।
২. যেসব বিষয় মুবারক বা বৈধ, সেগুলো ও পারতপক্ষে এড়িয়ে চলতে হবে। বিশেষ করে চোখ ও কানকে আপাত বৈধ তবে অপ্রয়োজনীয় বিষয় থেকেও যতটা সম্ভব দূরে সরিয়ে রাখার চেষ্টা করতে হবে।
৩. কুরআন তেলাওয়াতের পরিমাণ ধীরে ধীরে বাড়িয়ে তুলতে হবে। সাধারণ তেলাওয়াত ও তাদাব্বুরের সাথে সাথে বুঝে বুঝে তেলাওয়াত উভয়টাকেই গুরুত্ব দিতে হবে। তাদাব্বুরের সাথে বেশি বেশি না পারলেও প্রতিদিন কমপক্ষে এক আয়াত হলেও গভীর অভিনিবেশে পড়তে হবে।
৪. কুরআন কারীমের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় করে রাখব। দুনিয়া ভেঙে তছনছ হয়ে গেলেও কুরআনের রুটিন ঠিক রাখব। কুরআনের সময় হলে, দুনিয়াবি যত ব্যস্ততাই থাকুক, টলব না। সময়টাও চিন্তাভাবনা করেই নির্ধারিত করব। কুরআগের রুটিন ঠিক রাখাটা যেন জীবন ও মরণের প্রশ্ন হয়ে দাঁড়ায়। সবচেয়ে ভালো হয়, সময়টা সাহরির আগে বা পরে হলে।
৫. কুরআগের সান্নিধ্যে থাকার সময় মোবাইল, ইন্টারনেট থেকে দূরে থাকার প্রাণপণ চেষ্টা করবো।
৬. অহেতুক কথা না বলে বেশি বেশি আল্লাহর যিকিরে মশগুল থাকব। অতীব প্রয়োজন ছাড়া দুনিয়াবি কথা বলব না। প্রয়োজনহীন কথা কলবের সজীবতা নষ্ট করে দেয়। আল্লাহর যিকির কলবকে সজীব রাখে। প্রাণবন্ত করে তোলে। আল্লাহর যিকিরহীন করব ক্রমে নির্জীব হয়ে যেতে থাকে।
৭. যাবতীয় অপ্রয়োজনীয়তা পরিহার করে চলব। অপ্রয়োজনীয় মত বিনিময়, অপ্রয়োজনীয় বইপত্র, সংবাদ পত্র পাঠ কলব থেকে রমাদানের নুর নষ্ট করে দেবে। এসব থেকে বেঁচে থাকতে হবে।
৮. রমাদান উপলক্ষ্যে নিজেকে পরিবর্তনের সূচনা এখন থেকেই করতে হবে। আজ নয় কাল- এমন অহেতুক কালক্ষেপণ করব না, ইনশাআল্লাহ।
৯. সাধ্যনুযায়ী প্রতিদিনই কিছু না কিছু দান সদকা করব। তারাবিহ, তাহাজ্জুদ, ইশরাক, চাশত, আওয়াবীন বাদ দিবো না। এক ওয়াক্ত নামাজের জামাতও ছুটতে দিবো না। গীবত করবো না। আত্মীয়স্বজনের খোঁজখবর নিব, ইন শা আল্লাহ।
১০. রমাদানের আগেই যাবতীয় প্রয়োজনীয় বাজার-সদাই করিয়ে রাখতে পারি। আখিরাতের বাজার নিয়ে মশগুল থাকার সময় যাতে দুনিয়ার বাজারের পিছনে ছুটতে না হয়। ঈদের প্রস্তুতি ও খানিকটা সেরে রাখতে পারি। শেষ দশকে বরকতময় রাতগুলো একমনে ইবাদাতে কাটানো সহজ হবে।
১১. রমাদান হতে পারে সব ধরনের পরিবর্তনের সূচনা। নিজেকে, পরিবার কে এবং আশেপাশে আরো ভালোর দিকে নিজে যাওয়ার সূচনা। যাবতীয়য় নেতিবাচকতা থেকে মুক্তির সূচনা। ব্যক্তিগত সমস্যা ও পারিবারিক ঝামেলা থেকে মুক্তির সূচনা।
রব্বে কারীম সবাইকে তাওফিক দান করুন। ইখলাস দান করুন। আমলে ইস্তেকামাত দান করুন। আমিন।