মিলন হোসেন, বগুড়া জেলা প্রতিনিধি –
বগুড়ায় মধুমাস জ্যৈষ্ঠের শুরুতে আগাম জাতের লিচু বিক্রি শুরু হয়েছে। মৌসুমের শুরুতেই রসালো এ ফল ক্রয় করতে আগ্রহের কমতি নেই ত্রেতাদের। তবে গত বারের চেয়ে এবার দাম দ্বিগুণ হওয়ায় লিচু এখন সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশে চলমান তাপপ্রবাহ ও অনাবৃষ্টির কারণে এবার লিচুর ফলন কমের পাশাপাশি আকারেও অপেক্ষা কৃত ছোট হয়েছে। এছাড়া ফেটে যাওয়া সহ পোড়া ক্ষত দেখা যাচ্ছে লিচুর গায়ে। এতে বড় প্রভাব পড়েছে বাজারে। এছাড়াও মাত্র একসপ্তাহ আগে থেকে বগুড়ার বাজারে লিচু আসতে শুরু করেছে। যশোর থেকে আসা এসব লিচু অপরিপক্ব ও আকারে ছোট। রাজশাহী বা দিনাজপুরের পরিপুষ্ট লিচু এখনো বাজারে আসেনি। এ দুই জেলার লিচুর জন্য ক্রেতাদের আরও দুই সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে। সাধারণত দিনাজপুরের লিচু স্বাদ ও মানে আলাদা। আর বাজারে আসার আগে বৃষ্টি পেলে এসব লিচু আকারে বড় এবং রঙ সুন্দর হবে। পাশাপাশি রসে ভরা থাকবে। সারা দেশেই এ লিচুর চাহিদা বেশি।
বিভিন্ন জাতের লিচুর মধ্যে আছে বেদানা, বোম্বাই, মাদ্রাজি, চায়না-থ্রি ইত্যাদি।
বগুড়া শহরের সপ্তপদী মার্কেট, সাতমাথা, থানা মোড় ও কাঠালতলা সহ শহরের কয়কেটি বাজার ঘুরে লিচু ক্রয়-বিক্রয়ের এমন তথ্য জানা যায়।
বিক্রেতারা বলছেন, প্রথম দিকে হওয়ায় বাজারে লিচুর দাম তুলনামূলক বেশি। এছাড়াও ফলন কম হওয়ায় গতবারের তুলনায় লিচুর দাম এবার দ্বিগুণ। গত জ্যৈষ্ঠের শুরুতে যশোরের প্রতি একশো লিচু ২০০ থেকে আড়াইশো টাকায় বিক্রি হয়েছে। এবার সেই লিচু কিনতে হচ্ছে সাড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়।
বগুড়া শহরের সপ্তপদীর মার্কেটের পাশে ফুটপাতে লিচু বিক্রেতা বলেন, গতবারের চেয়ে এবারে লিচুর দাম বেড়েছে। পাইকারি বাজারে দাম বৃদ্ধি পওয়ায় খুচরা বাজারে এর প্রভাত পড়েছে। প্রতি একশো লিচু ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা দামে কেনা পড়ছে। যা ৩০ থেকে ৪০ টাকা লাভ রেখে আমরা বিক্রয় করছি।
কাঠালতলায় লিচু কিনতে আসা একজন বলেন, বছর ঘুরলেই লিচুর দাম দ্বিগুণ হয়ে যায়। এখানেও একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীর কারসাজি আছে। প্রশাসনের উচিত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। এরপরও একে তো মধু মাস তারমধ্যে লিচুর তুলনা তো অন্য কোনো ফল দিয়ে হয় না। তাই দাম দ্বিগুণ দিয়েই পরিবারের জন্য কিনে নিয়ে যাচ্ছি।
ফলপট্টির নিউ বগুড়া ফল ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী সিপু দাস বলেন, জ্যৈষ্ঠর শুরুতে বাজারের সিংহভাগ যশোর ও নাটোরের আহম্মেদপুরের যে লিচু এসেছে তা মোজাফফর জাতের। প্রতিদিন ভোরে বাগান মালিক ও চাষীরা পট্টিতে এসে নিলামে লিচু বিক্রি করেন। পাইকারী ব্যবসায়ীদের প্রতি হাজার লিচু আড়াই থেকে তিন হাজারে কিনতে হচ্ছে। এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে রাজশাহী ও দিনাজপুরের পরিপুষ্ট রসালো লিচু পাওয়া যাবে।
জেলা ফল ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জুলফিকার আনাম তুষার বলেন, মৌসুমের শুরুর দিকে হওয়ায় লিচুর দাম কিছুটা বেশি। এখনও বাজারে সেইভাবে লিচু আসতে শুরু করেনি। তবে রাজশাহী ও দিনাজপুরের লিচু বাজারে আসলে দাম কিছুটা কমবে বলে জানান তিনি।