(নড়াইল) প্রতিনিধি:
নড়াইলের লোহাগড়ায় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের ১০২ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়েছে। মামলায় বিএনপির প্রভাবশালী নেতাদের আত্মীয় স্বজনের নাম আসামির তালিকায় না থাকাসহ নিরীহদের আসামি করায় বিতর্কের সৃষ্টি।
মামলার ২ নম্বর সাক্ষী মাইন সরদার নিজেই জানেন না মামলার বিষয়ে। এ নিয়ে মাইন সরদার নিজের ফেসবুক আইডিতে এক স্টাটাসের মাধ্যমে তিনি লেখেনঃ ১৫/০৯/২০২৪ রাত ১০ টায় ০৪ আগস্টের ঘটনা নিয়ে যে মামলাটি লোহাগড়া থানায় করা হয়েছে। আমি ক্লিয়ার করছি আমি মামলার সাথে জড়িত না। আমাকে ০২ নং সাক্ষী করা হয়েছে অথচ আমি বিন্দুমাত্র এই বিষয়ে অবগত নই। এটা অত্যান্ত বিব্রতকর। কে বা কারা ষড়যন্ত্রমূলক আমার ইমেজ নষ্ট করতে চাচ্ছেন। সে যে হোক আমার পরিচিত বা বিশেষ কোন মাতব্বর বা নেতা বিষয়টি দ্রুতই ফেস করবো আমি। কথাটা একদম পরিস্কার।
মাইন সরদারের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি ফেসবুকের স্টাটাসের বিষয়টি শিকার করেন। তিনি আরও বলেন যারা ওইদিনের ঘটনার সাথে জড়িত ছিল তাদের অনেককেই বাদ রেখে স্বজন প্রীতি দেখিয়ে মামলা থেকে তাদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে মাইন সরদার লোহাগড়া পৌর বিএনপির সাবেক আহবায়ক প্রয়াত রিকাত সরদারের ছেলে।
মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে মামলাটি দায়ের করেন পৌরসভার মশাগুনি গ্রামের মো: আজিবর মল্লিকের ছেলে মো: শহিদুল মল্লিক।
লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। লোহাগড়া থানায় মামলা নম্বর ১১।
মামলায় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ফয়জুল হক রোমকে এক নম্বর আসামি করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুন্সি আলা উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র সৈয়দ মশিয়ার রহমান, পৌরসভার কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র বিশ্বনাথ দাস ভন্ডুল, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ফয়জুর আমির লিটু, কাশিপুর ইউপি চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান, ইতনা ইউপি চেয়ারম্যান শেখ শিহানুক রহমান, লাহুড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান কামরান সিকদার, জয়পুর ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম সুমন, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল লিওন, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বিএম কামাল হোসেন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাঈম ভূইয়া, সাধারণ সম্পাদক স্বপ্নীল সিকদার নীল, লোহাগড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মারুফ শেখ, সাধারণ সম্পাদক সজীব মুসল্লীসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের ১০২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১০০-১৫০ জনকে আসামি করে লোহাগড়া থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ৪ আগস্ট সকাল ১১ টার দিকে লোহাগড়া সি এন্ড বি চৌরাস্তা এলাকায় কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্দেশনা মোতাবেক বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার সাথে একত্বতা প্রকাশ করে একত্রে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে আসামিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে রামদা, লাঠি, ছোরা, শর্টগান, বন্দুক, পিস্তল, হাতবোমাসহ মারাত্নক অস্ত্রাদী নিয়ে জোটবদ্ধ হয়ে হত্যার উদ্দেশ্য বাদী, সাক্ষীসহ বিএনপি নেতাকর্মীদের কুপিয়ে জখম করে ও বেধড়ক মারপিট করে। এ সময় এনপিপির চেয়ারম্যান ও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদের বাড়িসহ বিএনপির অন্যান্য নেতাকর্মীদের বাড়ির গেট ভাংচুর করে। এসব বাড়ি ভাংচুর চালিয়ে প্রায় তিন লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি করে। ভাংচুর চালিয়ে সন্ত্রাসীরা বিএনপির নেতাকর্মীদের বিভিন্ন ধরনের জীবন নাশের হুমকি প্রদান করে ও ককটেল বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নেতাকর্মীদের আহত করে এবং আতংকসৃষ্টি করে ওই এলাকা ত্যাগ করেন।